Posts

Showing posts with the label ডিসেম্বর

গল্প - হুমায়ূন কবীর ঢালী

Image
ঘুড়ি উড়ছেই এক. সকাল থেকে অপুর কোনো খোঁজ নেই। সেই যে সাতসকালে দুটো রুটি খেয়ে বেরিয়েছে ছেলেটা ,  বেলা গড়িয়ে বিকেল ,  সন্ধ্যা হয় হয় ,  তবু বাড়ি ফেরার তাড়া নেই। মাঠ থেকে যে গরু-বাছুর আনতে হবে সেই কথাও বেমালুম ভুলে গেছে। গোয়ালঘরে বাঁশের খুঁটিতে গাভীটাকে বাঁধতে বাঁধতে ভাবল মাসুদা বেগম। গাভীটার পাশে দাঁড়িয়ে আছে একমাসের বাছুর লালু। লালু নামটা অপুরই দেয়া। প্রথম যেদিন লালু পৃথিবীর বুকে পা রাখল ,  অপুর কী আনন্দ! সেদিনই অপু তার মাকে বলেছিল ,  মা ,  আমি ওর নাম রাখলাম লালু। বেশ তো তোর যা খুশি রাখ। আজ থেকে লালু আমার সাথী। ওকে নিয়ে তোমাদের একটুও ভাবতে হবে না। সেই থেকে লালুর দেখাশোনার ভার অপুর ওপর পড়ল। লালুর সাথে অপুর বেশ ভাব। চমৎ কার   বন্ধুত্ব।   কেউ   কাউকে   না   দেখে   একদিনও   থাকতে   পারে   না।   সকাল   হলেই   লালু   অপেক্ষায়   থাকে   কখন   অপু   আসবে।   মায়ের   সাথে   তা কে মাঠে নিয়ে যাবে। যেতে যেতে অপুর সাথে দুষ্টুমি করবে। লাফালাফি ,  ছুটোছুটি ,  লুটোপুটি ...

গল্প - নিলয় নন্দী

Image
  টিনের সানাই টিনের সানাইটা গবা যে কীভাবে পেয়েছিল সেটা এখন আর কেউ ঠিক করে বলতে পারে না। ঘোষালদের বাড়ির মেয়ের বিয়ে হয়ে যাবার পরে বাজনাদাররা সব বাজনা-টাজনা গুছিয়ে নিয়ে চলে গেল। সেই সময় ফেলে গেল আধভাঙ্গা এই সানাইটা। ভুল করে রেখে গেল নাকি ইচ্ছে করেই ফেলে গেল সেটা বলা মুশকিল। গ্রামের অনেকেই বলে গোয়াল ঘরের পাশে শামিয়ানার কাপড় গুছিয়ে রাখার সময় জিনিসটা গবা কুড়িয়ে পেয়েছিল। বাজনাদারদের সঙ্গে ফাই ফরমাস খাটবে বলে যে ছোকড়াটা এসেছিল , সানাইটার মাথা একটু ভেঙ্গে যাওয়াতে সে ওটা ফেলে চলে যায়। গবা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ঘষে মেজে খুব কষে ফুঁ দিতে দিতে শেষপর্যন্ত সেটা থেকে আওয়াজ বের করে ফেলল। তারপর তার সানাই বাদনের চোটে শাজানপুর গ্রামবাসী সবাই ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠল। মাসখানেকের মধ্যে গ্রামে তার নাম হয়ে গেল সানাই গবা! গবা কিন্তু মোটেও এই সানাই থেকে কোন গানের সুর বের করতে পারে না। সেই নিয়ে তার কোন মাথা ব্যথাও নেই। সানাইয়ে যে আওয়াজ হয় সেটুকুই যথেষ্ট। ধানক্ষেতের মাঝখানে গিয়ে গবা গায়ের জোরে সানাইয়ে এক ফুঁ দেয়। সেই উদ্ভট শব্দে ভয় পেয়ে সেদিন কাকপক্ষীতেও আর ক্ষেতের ধারে কাছে আসে না। জমির মালিক হয় তো খুশি হয়ে গবাকে ...

গল্প একাত্তর - বাদল সৈয়দ

পরাজয় বেশ বড়সড় কক্ষটার চারিদিক বেশ অন্ধকার। শুধু মাঝখানটায় তীব্র পাওয়ারের একটা বাল্ব সরাসরি তাঁর নিচের চেয়ারটার উপর পড়েছে।   অন্ধকার এক কোনায় একটা টেবিল ঘিরে তিনজন মানুষের  ছায়া দেখা যাচ্ছে। তাদের সামনে একটা ইলেক্ট্রিক প্যানেল। মাঝখানে  যিনি বসে আছেন তিনি  কর্নেল সেকান্দার খান। আলোতে গেলে বোঝা যাবে  তিনি একজন অসম্ভব সুদর্শন মানুষ। আজ তাঁর মনটা ও খুব ভাল। খুব ভাল। তিনি আনন্দিত চোখে আলোর নিচে চেয়ারে শুয়ে থাকা যুবকের দিকে তাকালেন। তীব্র আলোয় মানুষটির খুব কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু কিছু করার নেই, কারণ তার চোখের পাতা পিন দিয়ে গেঁথে দেয়া হয়েছে যাতে তা বন্ধ করা না যায়। হাত পা শক্ত করে প্যাড লাগানো রশি দিয়ে চেয়ারের সাথে বাঁধা। তাঁর পেটের উপর দুটো ইস্পাতের মাকড়সা নিরীহ ভঙ্গিতে  বসে আছে।

স্মৃতি ১৯৭১ - নার্গিস আফরোজ বানু

  একাত্তরের স্মৃতি মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জীবনের এমন এক অধ্যায় , যার কথা একটি দিনের জন্যেও ভোলা যায়না । তোমরা জানো নিশ্চয়ই , আমাদের বাংলাদেশ সবসময় এই নামে পরিচিত ছিলনা । ভারতবর্ষে অত্যাচারী ইংরেজদের শাসনের অবসানে পাকিস্তান নামে যে দেশটি সৃষ্টি হয় , তাতে ছিল পশ্চিম পাকিস্তান আর পূর্ব পাকিস্তান নামে দুটি অংশ । আমরা ছিলাম এই পূর্ব পাকিস্তানের বা পূর্ব বাংলার মানুষ । কিন্তু স্বাধীন দেশের অংশ হলে কী হবে ,   পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের ভাগ্য ছিল খুবই খারাপ। তারা নতুন করে নির্যাতনের শিকার হলো পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকদের হাতে , যারা ছিল মূলত অবাঙ্গালী। বাঙ্গালীদের এরা খুব হীন চোখে দেখতো। সেই পশ্চিম পাকিস্তানীদের হাত থেকে রেহাই পেতে বাঙ্গালীকে আবার হাতে তুলে নিতে হলো অস্ত্র। সে অস্ত্র হাতে তুললো এদেশের সৈন্য , পুলিশ , কৃষক , শ্রমিক সব শ্রেণীর মানুষ। পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশে পরিণত করার যে যুদ্ধ সেই যুদ্ধকেই বলে মুক্তিযুদ্ধ। সব যুদ্ধই কষ্টের, ক্ষতির, মানবতা ধ্বংসকারী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধও ছিল খুব ভয়াবহ। পাকিস্তানীরা এমন বর্বর অত্যাচার করেছিল বাঙ্গালীদের উপরে যে সারা বিশ্ব স্...

গল্প - মৌলী আখন্দ

Image
পাখির বাসা   “ আম্মু আম্মু দেখ দেখ ওই দেখ একটা টি রেক্স! ” মীরা লামিয়ার আঙুল অনুসরণ করে তাকাল। সত্যিই এক টুকরো মেঘ ভেসে যেতে যেতে এমন একটা আকৃতি তৈরি করেছে মনে হচ্ছে যেন একটা টি রেক্স। মীরা নরম গলায় বলল, “ এই মেঘটার নাম কী মনে আছে? ” চার পেরোনো লামিয়া উৎসাহে চেঁচিয়ে উঠে বলল, “ আছে তো! কিউমুলাস মেঘ! ” মীরা হাতের ঝাঁঝরিটা নামিয়ে রেখে রেলিং এ হেলান দিয়ে দাঁড়াল। “ আর ওই পেছনে দেখ, কেমন জমাট বেঁধে আছে তুলোর মত! মনে হচ্ছে মেঘের উপর একটা প্রাসাদ! ”

গল্প - তন্বী হালদার

Image
ঝিমলির স্বপ্ন   নতুন ফ্ল্যাটে এসে দাদু ঝিমলিকে বলেছিল, ‘ জানিস ঝিমলি এই ফ্ল্যাটটা এখন যেখানে আছে, আগে এখানে এমন জঙ্গল ছিল যে দিনের বেলায় শিয়াল ডাকতো ’ । ঝিমলির বিশ্বাস হয় নি, ‘ যাঃ এমনটা হয় নাকি? ’ দাদু সত্যির উপর জোর খাটিয়ে বলেছিল, ‘ সত্যি – সত্যি – সত্যি ’ । দাদু আরও বলেছিল, ‘ চন্দ্রবোড়া, কেউটে কতরকম সাপ ছিল। এখন যেখানে তোদের সুইমিং পুল হয়েছে ওটা তো ছিল নেকড়েটার বাসা। ডালে ডালে হনুমান, হুফ হুফ করে বেড়াতো। গাছের কোটরে কোটরে কাঠবিড়ালি থাকতো। সে এক সাংঘাতিক ব্যাপার ’ । ঝিমলি জানলা দিয়ে একবার বাইরে তাকায়। কোথায় জঙ্গল, গাছ, চারিদিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে তাদের উত্তরা আবাসন। ঝিমলি ঠোঁট উল্টে দিয়ে বলে, ‘ ধ্যাৎ তুমি বানিয়ে বানিয়ে বলছ। তুমি নিজে চোখে দেখেছো? ’ দাদু এবার একটু ঘাড় নেড়ে বলে, ‘ না, আমি সবটা দেখি নি। তবে আমার দাদু দেখেছে এবং শুনেছে এই জায়গায় শিয়াল ডাকছে ’ । দাদুর কথাটা ঝিমলি পুরোটা বিশ্বাসও করে নি। আবার উড়িয়ে দিতেও পারে নি। তাই রাত্রে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তাদের খাঁচায় রাখা টিয়াটার দিকে তাকিয়ে ভাবছিল – ইস্ত্রিওয়ালা দর্জি কি বলতে পারবে একথা সত্যি কিনা। দর্জি ভু...

গল্প - বেগম জাহান আরা

Image
তুষ্ট বাবুর ছাদ বাগান   মা বাবাকে বলে কয়ে ছাদের একটা কোনায় বাগান করেছে তুষ্ট। প্রথম এক বছর শুধু ফুলের গাছই ছিলো। কতোই আর জায়গা! দুই মিটার বাই তিন মিটার। বারোটা টবে চন্দ্রমল্লিকা , গাঁদা , কিছু মৌশুমী ফুলের গাছ লাগালো। চমতকার ফুল ফুটেছিলো। তার ছাদ বাগান দেখে সবাই খুশি। উতসাহের চোটে  দ্বিতীয় বছরে টবের সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাবছে সে। মামা ফরহাদ বেড়াতে এসে বললো , তোর তো অনেক জায়গা মামা। একটা আম গাছ লাগা , এক্কেবারে কোনায়। - সে তো অনেক বড়ো গাছ মামা। ছাদ ভেঙে পড়বে না ? - কি বলে পাগল ? কলমের গাছ লাগাবি। সে গাছ বেশি বড়ো হয় না। - না মামা , শেষে আমার বাগানের সখটাই বাতিল করে দেবেন বাবা। - কি যে বলিস! আজই একটা কাটা ড্রাম কিনে আনবো। - অতোটুকু ড্রামে আম গাছ হবে না গো মামা। - আমি তো করেছি দশটা গাছ। ছাদে না , পেছনের ছোটো বাগানে। সবগুলোই কাটা ড্রামে। এইবছর মুকুলও এসেছে।

গল্প - পৃথিকা ইসলাম বৈশালী

Image
যাদের   কাছে   ঋণী বৃষ্টি একটা গাছের আড়াল থেকে দেখছে , বড় গাড়িটা এসে মাস্টার বাড়ির সামনে থামলো । কয়েকদিন আগে থেকেই শোনা যাচ্ছে , মাস্টার বাড়ির ছেলে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসবে । যদিও যুদ্ধের সময় ওরা এখানেই ছিলো । তারপর আবার ঢাকা চলে গিয়েছে । যুদ্ধের সময় বৃষ্টি বাড়ি থেকে বের হতো তবে মাস্টার বাড়ির যে নাতনি তার সাথে দেখা হয়নি । ওরা বোধহয় বেশি সাবধান তাই কাউকে ঘর থেকে বের হতে দিতো না । এখন যুদ্ধ শেষ ওরা মনে হয় বের হবে । গাড়িটাকে ঘিরে একটা বড় ভিড় । সবাই গাড়ি দেখবে । ছোট ছোট বাচ্চারা গাড়িটা ছোঁয়ার চেষ্টা করতে থাকে । একজন একটু ছুঁয়ে এসে বন্ধুদেরকে গর্ব নিয়ে গাড়ি ছোঁয়ার কাহিনী বলতে থাকে । বৃষ্টি জানে মাস্টার বাড়ির নাতনি তার সমান বয়সীই । তার সমান একটা মেয়ে গাড়িতে করে আসছে তার সামনে বৃষ্টির কেন জানি যেতে ইচ্ছে করলো না । তাই বৃষ্টি একটা গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে দেখছে । রিয়া গাড়ি থেকে নেমে একটু থতমত খেয়ে গেলো । এতো মানুষ কি শুধু তাদেরকে দেখতে এসেছে ? রিয়া একটু অবাক হয়ে সবাই কে দেখে । কিছু কিছু মহিলা গাছের আড়াল থেকে দেখছে । ছোট ছেলে মেয়েরা গাড়ি ছোঁয়ার চেষ্টা করছে । রিয়া বুঝ...

কবিতা - মারজানা সাবিহা শুচি

ষোলোই ডিসেম্বর   ছোট্টসোনা আজকে শোনো খুব প্রিয় সে কাহিনী, বিজয়-সূর্য আনলো জিতে বীর মুক্তি-বাহিনী। কাহিনীটা একাত্তরের ডিসেম্বরের ষোলো, তবে তোমায় জানতে হবে তার আগে কী হলো।

কবিতা - আহসানুল হক

অসীম সাহস  সেদিন  ওরা যুদ্ধে গেল স্বপ্ন নিয়ে বুকে  ওড়াবে যে বিজয় নিশান স্বাধীন দেশে সুখে  বুকের ভেতর তেজ ছিল খুব  কে ওদেরকে রুখে  ?  বিজয় পেলাম, পতাকাও পেলাম স্বদেশ ভূমি  যাদের ত্যাগে পেলাম এসব শ্রদ্ধায় তাদের চুমি!  যায়নি তো বাদ কিশোর -যুবা এই যে যেমন 'রুমী' অযুত বোনের আব্রু গেছে  যায়নি তো বাদ সুমি!

ধারাবাহিক গল্প- সোফি পারোভি রেইন

Image
দু ’ টি বিড়ালের অভিযান- ২ সিল্কি খালার ভাবসাব দেখে বুঝে গেল এটা খালার কাজ। সে অনেক ভেবে চিন্তে বাসা থেকে বের হওয়ার প্ল্যান করলো। খালা যখন ময়লা ফেলতে বাইরে যায় তখন সেও আস্তে করে চলে যাবে। কিন্তু লিলি সবসময় তার কাছে থাকে। মিল্কিকে দেখতে না পেয়ে লিলিও খুব চিন্তিত। সেও সব জায়গায় খুঁজেছে কিন্তু মিল্কিকে খুঁজে পায়নি আর সেজন্য সিল্কিকে সবসময় কাছে কাছে রাখে। তাই সিল্কি ভাবল তাকে এমন করে বের হতে হবে যেন লিলি দেখতে না পায়। যেদিন লিলির ক্লাস থাকবে সেদিন তাকে বের হতে হবে।

গল্প - তাবাসসুম নাজ

Image
  কংকা ও বুবুন --- বাবা । --- হু । --- বাবা ! --- বল , মা । শুনছি । ভাত খেতে খেতে বাবা বলল । --- মেলা দেখতে যাব , বাবা । বাসার আশেপাশে কোথায় যেন মেলা বসেছে । গতরাত থেকে গান আর হৈচৈ এর শব্দ ভেসে আসছে । --- মেলা ? তুমি মেলায় যেতে চাও ? আগে তো কখনো চাও নি । হাসতে হাসতে বাবা বলল । --- এখন চাই , বাবা । আমাদের ক্লাসের মৌলী মেলায় গেল , কত মজা করল , কত কী খেল , কত কী কিনল । আমিও মেলায় যাব , বাবা ।

অনুবাদ গল্প - সৈয়দা শর্মিলী জাহান

Image
  ছোট্ট গোলাপি গোলাপ একদা একটি অন্ধকার ঘরের ছাদের নীচে একটি ছোট্ট গোলাপি গোলাপ কুঁড়ি ছিলো । একদিন সে নিজের মতো করে স্থির বসে ছিলো । হঠাৎ সে দরোজায় মৃদু টক্ টক্ টক্ শব্দ শুনতে পেলো। সে জিজ্ঞেস করলো " কে ওখানে ?" উত্তরে সে মৃদু , কোমল কন্ঠে শুনতে পেলো " আমি বৃষ্টি এবং আমি ভেতরে আসতে চাই।" গোলাপ কুঁড়ি বললো " না তুমি আসতে পারবে না।" অচিরেই জানালার শার্সিতে সে আরেকটি মৃদু টক্ টক্ টক্ শব্দ শুনতে পেলো । সে জিজ্ঞেস করলো " কে ওখানে ?"

গল্প - মাইনুল এইচ সিরাজী

Image
  অবাক জাদুকর শ্যামল আর কমল দুই বন্ধু। তারা একই ক্লাসে পড়ে। নামের মিলের কারণে তাদের বন্ধুত্ব হয়েছে। আরও বন্ধুত্ব হয়েছে আরেকটা বৈশিষ্ট্যের কারণে। ক্লাসে তারা সবচেয়ে দুষ্টু। দুজনই সমান দুষ্টু। সুতরাং দুষ্টুতে দুষ্টুতে বন্ধুত্ব। কিন্তু কিছু সমস্যা আছে তাদের। শুধু তাদের নয় , ক্লাসের সবার। আবার শুধু ক্লাসের নয় , গোটা স্কুলের সব ছাত্রছাত্রীর। কথা হচ্ছে , তারা দুষ্টু বলে সমস্যাগুলোর কথা তারা অন্যদের বলে ফেলে , সমস্যাগুলো নিয়ে তারা বেশি ভাবে। সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে বেড়ায়। সমাধান না পেয়ে প্রায়ই স্কুল পালায়। কী তাদের সমস্যা ? তাদের পড়ার চাপ বেশি। পড়ার চাপে পড়ে তারা খেলাধুলা করার সময় পায় না।

নাটিকা - মঈন উদ্দিন কোহেল

  মুক্তির আলোয়   দৃশ্য     : এক (সময় : সকাল। মাইকে দেশাত্ববোধক গান বাজছে। বাচ্চাদের কোলাহল।)   বৃষ্টি      : স্নেহা, এই স্নেহা। স্নেহা     : আরে বৃষ্টি, তোকে না গানের মহড়ায় দেখে এলাম। মহড়া কি শেষ ? বৃষ্টি      : না। একটু বিরতি দিয়েছে। কিছুক্ষণ পর নাটকের মহড়া শুরু হবে। সুমি আপু বললো, আমাদেরকে কাছাকাছি কোথাও থাকতে। তুইওতো নাটকে আছিস, তাই না ? স্নেহা     : হ্যাঁ। আচ্ছা নাটকের সংলাপ মুখস্ত হয়েছে তোর ? বৃষ্টি      : হ্যাঁ হয়েছে। তোর ? স্নেহা     : আমারও। তবে কিছুটা ভয় ভয় লাগছে, জানিনা ঠিক মতো পারবো কিনা।

গল্প - ইমতিয়ার শামীম

Image
নদীরা কেন সমুদ্রে যায়   নদীরা কেন সমুদ্রে যায় ? এই গল্প অনেক আগের। এত আগের যে গল্পটা সবাই একদমই ভুলে গেছে। আমারও তা মনে নেই ভালো করে। তবে এইটা জানি , পৃথিবীতে তখন কোনও নদী ছিল না। তা হলে কেমন ছিল সেই পৃথিবী ? চিন্তা করতেই গা ছমছম করে ওঠে! নদী নেই মানে কোনও পানি নেই। নদী নেই মানে বৃষ্টি নেই , বর্ষা নেই , বন্যাও নেই। নেই কোনও ছোট্ট ডোবা। অনেক গর্ত আছে , খানাখন্দ আছে ; কিন্তু একরত্তি পানি নেই তার ভেতর। ডোবাকে তাই কেউ ডোবা বলে না। নদী নেই বলে বানের টানে পানি এসে জমে না তার বুকের ওপর। আকাশ থেকে বৃষ্টি নেমে এসে ঘুমিয়ে পড়ে না ডোবার কোলে।

গল্প একাত্তর - হারুন রশীদ

Image
আলো হয় ভোর না হতেই ঘর থেকে বের হতে হলো হানিফকে। একটু দূরে নদীর তীরে ঝোপ-জঙ্গল। তার পাশেই কাজটা সারতে হবে। তখনো অন্ধকার পুরোপুরি কাটেনি। হালকা কুয়াশা ছড়িয়ে আছে চারপাশে। পথঘাট ঝাপসা লাগে। হানিফদের বস্তির একদিকে নদী অন্যদিকে বড় একটা জুটমিল। হানিফের বাবা সেই জুটমিলে ঝাড়ু দেয়। জুটমিলের সীমানা দেয়ালের উত্তরদিকে যে গলিপথ আছে সেদিকে পাঁচ মিনিট হাঁটলেই অনেকগুলো সারিবদ্ধ বেড়ার ঘর। এর একটিতে হানিফরা থাকে। নদীর তীরে যেতে হলে জুটমিলের পাশ দিয়ে যেতে হয়। কোথাও কোন লোক নেই। এখনো  পাড়ার ঘুম ভাঙেনি। জুটমিলের  বিশাল দেয়ালের পাশ দিয়ে যেতে যেতে গা শিরশির করে উঠলো হানিফের। মা বলে দশ বছরের দামড়া ছেলে এখনো একলা গিয়ে বাথরুম সারতে পারে না। তাদের বস্তি ঘরে বাথরুম নেই। সবাই নদীতীরের একটা ছাপড়াতে গিয়ে কাজ সারে।  এলাকাটা শহর থেকে একটু দূরে। নিরিবিলি গ্রামাঞ্চল। কারখানা বন্ধ থাকলে তেমন কোন হৈ চৈ থাকে না। সামনে বড় রাস্তা দিয়ে মাঝে মাঝে দুয়েকটা গাড়ি ছুটে যায় সাঁই সাঁই করে। নইলে সারাদিন ঝিম মেরে থাকে পুরো এলাকা। এখান থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব অনেক। সে কখনো শহরে যায়নি। কদিন আগে বাপের সাথে যাবার কথা ছিল, ...