ধারাবাহিক গল্প- সোফি পারোভি রেইন

দুটি বিড়ালের অভিযান- ২




সিল্কি খালার ভাবসাব দেখে বুঝে গেল এটা খালার কাজ। সে অনেক ভেবে চিন্তে বাসা থেকে বের হওয়ার প্ল্যান করলো। খালা যখন ময়লা ফেলতে বাইরে যায় তখন সেও আস্তে করে চলে যাবে। কিন্তু লিলি সবসময় তার কাছে থাকে। মিল্কিকে দেখতে না পেয়ে লিলিও খুব চিন্তিত। সেও সব জায়গায় খুঁজেছে কিন্তু মিল্কিকে খুঁজে পায়নি আর সেজন্য সিল্কিকে সবসময় কাছে কাছে রাখে। তাই সিল্কি ভাবল তাকে এমন করে বের হতে হবে যেন লিলি দেখতে না পায়। যেদিন লিলির ক্লাস থাকবে সেদিন তাকে বের হতে হবে।

এদিকে লিলি মিল্কি ভেবে আরেকটা শাদা বিড়াল নিয়ে এলো। সে দেখতে একদম মিল্কির মত। নতুন বিড়ালটা সিল্কিকে জিজ্ঞেস করলো...

আমাকে এই মেয়েটা কেন ধরে আনলো?

আমার বোন মিল্কি হারিয়ে গেছে আর তুমি দেখতে একদম ওর মতো তাই তোমাকে মিল্কি ভেবে নিয়ে এসেছে।

 ও আচ্ছা। কিন্তু আমি তো মাকে ছাড়া থাকতে পারি না। মা তো আমাকে খুঁজবে। আমি কীভাবে এখন মায়ের কাছে যাবো?

আমার নাম সিল্কি। আমি যদি তোমাকে এই বাসা থেকে বের হতে সাহায্য করি তাহলে তুমি কী আমাকে মিল্কিকে খুঁজতে সাহায্য করবা?

আমার নাম জিনজার। আমি অবশ্যই তোমাকে সাহায্য করবো।

পরের দিন খালা ময়লা ফেলতে বাইরে গেল। লুকিয়ে লুকিয়ে বের হলো সিল্কি আর জিনজার। অনেকদূর যাওয়ার পর জিনজার আর সিল্কি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তারা সামনে একটা কুকুর দেখে। তাঁদের মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। তাঁরা কুকুরটার কাছে সাহায্য চাইলো। সিল্কি কুকুরটাকে বললো,

আমার নাম সিল্কি আর ওর নাম জিনজার। আমি আমার বোন মিল্কিকে হারিয়ে ফেলেছি। আমি আর জিনজার মিল্কিকে খোঁজার জন্য বের হয়েছি। কিন্তু ওকে তো খুঁজে পাচ্ছি না। আর আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। তুমি কি আমাদের একটু সাহায্য করবে?

আমার নাম টমি। আমি অবশ্যই তোমাদের সাহায্য করবো। কিন্তু তার বদলে প্রতিদিন আমার খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে তোমাদের।

ঠিক আছে। আমরা বাসায় ফিরতে পারলে তোমার জন্য খাবার দেবো। এখন চলো।

টমি সিল্কিকে বলল আমি তো মিল্কির গায়ের গন্ধ জানি না। ওর গায়ের গন্ধ জানলে শুঁকে শুঁকে আমি ওকে খুঁজে বের করতে পারতাম।

কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব। তুমি আমার গায়ের গন্ধ শুঁকে দেখো যদি কোন কাজে লাগে।

টমি সিল্কির গায়ের গন্ধ ভালো করে শুঁকে নিলো। এরপর সে সিল্কিদের বাসার কাছে গেল। আবার মাটিতে গন্ধ শুঁকে শুঁকে এগোতে লাগলো। কিছু দূর যাওয়ার পর ট্মির মনে হল গন্ধটা দুই দিকে চলে গেছে।

এদিকে মিল্কি ঘুম থেকে জেগে উঠলো। কোথায় সে? সে তো একটা পুকুরের পাড়ে! সে কীভাবে এই পুকুরের পাড়ে এলো? কিন্তু এখন তো তার অনেক ক্ষুধা পেয়েছে, সে কোথায় খাবার পাবে? সে চারদিকে খাবার খুঁজতে থাকে। কিন্তু তেমন কিছু পায় না। সামনে একটা জায়গায় অনেক খাবার ফেলে দেয়া দেখতে পেয়ে মিল্কি সেখানে যায়। কিন্তু সেখানে কয়েকটা বড় বিড়াল মিল্কিকে দেখে রেগে যায়। তারা মিল্কিকে তাড়া করে। মিল্কি দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তার ভীষণ কান্না পায়। সিল্কির কথা তার মনে হয়। লিলির কথা মনে হয়। সে মনে মনে ভাবে কীভাবে সে সিল্কির কাছে যাবে। সে লিলির কথাও ভাবে। এখন থেকে সে লিলির কাছ থেকে কোথাও যাবে না। কীভাবে যে সে এই পুকুর পাড়ে এলো!  

[চলবে...] 


প্রথম পর্ব

Comments

Popular posts from this blog

ভিনদেশী রূপকথা

আতনিন বিন জহির

বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা