অমর মিত্রের গল্প

দলমা মশায় দলমা মশায় ছোটকু থাকে ন’পাহাড়ি। ন’পাহাড়ি কোথায়, না অনেকদূর। বাসে কলকাতা থেকে সাত ঘন্টা তো হবেই। তার আগে পার হতে হবে দামোদর নদ। পার হয়ে যেতে হবে জঙ্গল। জঙ্গল পেরিয়ে ধু ধু মাঠ, তার ভিতরে একটুখানি জল, সেখানে বক বসে আছে চুপটি করে মাছের আশায়। একটু দূরে নেড়া পাহাড়ের কোলে বসে আছে মস্ত দুই পাখি। তারা মানিকজোড়। একসঙ্গেই থাকে। একসঙ্গে ওড়ে মস্ত ডানা মেলে। তা পেরিয়ে আবার জঙ্গল, বাস চলেছে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে। জঙ্গল শেষ হলে দেখা যাবে দূরে নীল পাহাড়। ওই হল ন’পাহাড়ি। নটি টিলা পাহাড়ে ঘেরা ন’পাহাড়িতেই থাকে ছোটকু। সে খুব ছোট যে তা নয়, আবার খুব বড় যে তাও বলতে পারি না। তার বাবা পাথর ভাঙে নয় পাহাড়ের এক পাহাড় ঘোড়া-মুরগা পাহাড়ের মাথায় বসে। সকালে যায়, বিকেলে ফেরে। যত পাথর ভাঙবে, তত মজুরি পাবে। তারপর বাবা পাহাড় থেকে নেমে এসে নিচের কুন্ডাবাবুর অফিস থেকে মজুরি নেবে কুন্ডাবাবুর লোক পাথরের মাপ বলে দিলে। কুন্ডাবাবু ওই পাহাড়টা ইজারা নিয়েছে। গোটা পাহাড় ভেঙে লরিতে করে করে সে শহরে পাঠিয়ে দেবে। তাতে শহরের রাস্তা হবে, বড় বড় ইমারত হবে। ন’পাহাড়ির এক পাহাড় ভ্যানিশ হয়ে যাবে একটু একটু করে। কুন্ডাবাবু নাকি ন’পাহাড়ি...