Posts

Showing posts with the label মার্চ

নিলয় নন্দীর গল্প

Image
মাটির রং লাল   দড়ি ধরে টানতে টানতে শামলীকে নিয়ে উঠোনে ঢোকে কাশেম। প্যন্টের দড়িটা ওর কখন ছিঁড়ে গেছে , কোমড়ের কাছটা টেনে এনে বাঁধতে থাকে একসাথে। এই ফাঁকে শামলী উঠোনের কোনে ফুলগাছে মুখ গুঁজে দিতে যায়। কাশেম দৌড়ে গিয়ে গলার দড়িটা হাতে তুলে নিয়ে ফিরে আসে , ‘ ও খালা , শামলীকে এই ধারে বেন্ধে দেব না গোয়ালে তুলে রাখব ? ’ ‘ গোয়ালেই তুলে রাখ বাবা , ’ শানুর আম্মা বারান্দা থেকে হাত নাড়ে। ‘ আবু ভাই পরে ধোঁয়া দিয়ে আসবে যা। ’ গরুটাকে গোয়ালে বেঁধে রেখে কাশেম ফিরে আসে। শানুর আম্মা আঁচলে বেঁধে রাখা পয়সাটা কাশেমের হাতে দিয়ে ভ্রু কুঁচকান , ‘ বেশি মিষ্টি খেলে পেটে কী হয় , জানিস ? ’ কাশেম উঠোনের কোনে গিয়ে মাথা চুলকায় , হাত নেড়ে ডাকে শানুকে। শানু গিয়ে মাথায় দেয় এক চাপড় , ‘ যা বাড়ি যা ! ’ ‘ শানু ভাই , ’ কাশেমের গলার স্বর খাদে নেমে আসে , ‘ মফিজ কাকার দোকেনে কী দেখেছি জানো ? ’ ‘ কী ? ’ ‘ পতাকা ! বাংলা দেশের পতাকা ! ’

প্রজ্ঞা মৌসুমীর গল্প

Image
ওরাংওটাং ও দেয়ালঘড়ি তুতুলের জ্যাঠুর বেজায় রাগ। তুতুলরা হয়তো ব্যাট-বল নিয়ে উঠোনে খেলছে। জ্যাঠু কোত্থেকে গুরুম করে এসে বলবে- 'এই হচ্ছেটা কি ওরাংওটাংয়ের দল!’ এতদিনে তুতুলরা জেনে গেছে- ওরাংওটাং হলো লেজ ছাড়া লাল রঙের বানর, ইংরেজী বানান Orangutan । তুতুলরা ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসে। সব ভাইবোনরা মিলে অনেক মজা করে, ধানক্ষেতে লুকোচুরি খেলে, আম বাগানে দৌড়ুয়, নৌকো চড়ে, দুপুরে পুকুর পাড়ে রোদ পোহানো কচ্ছপ ধাওয়া করে, লিচু গাছে উঠে লিচু চুরি করে। তবে জ্যাঠু দেখলেই বলবে- ‘এই ওরাংওটানের দল পড়তে বস! শুধু দুষ্টুমি!' ছু্টিতেও বই পড়তে ভালো লাগে কারো!

মারজানা সাবিহা শুচির গল্প

Image
পতাকার পিছনের কান্নাগুলো “বাবুই বাবুই তাড়াতাড়ি আয়, দাদু খাচ্ছেন! বাবুই তার পুতুলগুলো সাজাচ্ছিলো, পাপাইয়ের চাপা গলার ডাক শুনে সব ফেলে ছুট লাগলো। দুই ভাইবোন একদৌড়ে ডাইনিং টেবিলে গিয়ে ভাল মানুষের মতো মুখ করে বসলো, একটা চেয়ারেই দুইজন গাদাগাদি করে। একসাথে বসলে নিজেদের মধ্যে গুঁতোগুঁতি আর হাসাহাসি করতে সুবিধা হয় যে! বসির দাদু খাচ্ছেন। বাবুই পাপাইকে মা আগেই খাইয়ে দেন। অন্যদিন হলে ওরা এতোক্ষণে বিছানায় উঠে বালিশ নিয়ে মারামারিটা শুরু করে দিতো। আজ দাদুর খাওয়া দেখবে বলে অপেক্ষায় ছিলো। শুধু কি আজ, ওরা দুইদিন ধরে প্রতি বেলায়ই দাদুর খেতে বসার অপেক্ষায় থাকছে। দুদিন আগে ওদের বাবার এই মামাটি বেড়াতে এসেছেন, আর যেই না উনি খেতে বসলেন ওরা তো অবাক! এমনিতে কত শান্ত-শিষ্ট, খেতে বসলেই কেমন যে হয়ে যান! এক হাতে থালাটা আগলে রাখেন আর এক হাতে গাপুস গুপুস করে খেতে থাকেন। যেন খুব তাড়া আছে, এক্ষুনি খেয়ে শেষ না করলে যেন আর খাওয়াই হবেনা। আর চারপাশে কেমন ভয়-ভয় রাগ-রাগ চোখে তাকাতে থাকেন! দাদু অত বুড়ো নন কিন্তু খাওয়ার সময় মুখটা কেমন বুড়োটেও লাগে।