অনুবাদ গল্প - সৈয়দা শর্মিলী জাহান
ছোট্ট গোলাপি গোলাপ
একদা একটি অন্ধকার ঘরের ছাদের নীচে একটি ছোট্ট গোলাপি গোলাপ কুঁড়ি ছিলো । একদিন সে নিজের মতো করে স্থির বসে ছিলো । হঠাৎ সে দরোজায় মৃদু টক্ টক্ টক্ শব্দ শুনতে পেলো। সে জিজ্ঞেস করলো " কে ওখানে?"
গোলাপ কুঁড়ি বললো " না তুমি আসতে পারবে না।"
অচিরেই জানালার শার্সিতে সে আরেকটি মৃদু টক্ টক্ টক্ শব্দ শুনতে পেলো । সে জিজ্ঞেস করলো "কে ওখানে?"
গোলাপ কুঁড়ি বললো "না তুমি আসতে পারবে না।"
এরপর দীর্ঘদিন যাবৎ সময় থমকে রইলো । অবশেষে একদিন জানালার চারপাশে মৃদু খসখস, ফিসফাস শব্দ শোনা যেতে লাগলো ; খসখস, ফিসফাস, খসখস !
ছোট্ট গোলাপ কুঁড়ি জিজ্ঞেস করলো " কে ওখানে?"
একটি মৃদু, কোমল, আহলাদিত কন্ঠ জবাব দিলো "আমি সূর্যকিরণ এবং আমি ভেতরে আসতে চাই।"
"ন---না !" ছোট্ট গোলাপ কুড়ি বললো " তুমি ভেতরে আসতে পারবে না। " একথা বলে সে আবার নিশ্চুপ বসে রইলো ।
"আমি সূর্যকিরণ" আহলাদিত কন্ঠে জবাব এলো " আমি ভেতরে আসতে চাই।"
ছোট্ট গোলাপ কুঁড়ি জবাব দিলো " না না তুমি আসতে পারবে না ।"
অচিরেই একদিন,সে যখন খুব স্থবির হয়ে বসেছিলো তখন জানালার শার্সি,দরোজা এবং কি-হোলের চারপাশে খসখস, ফিসফাস, খসখস, ফিসফাস শব্দ করে কেউ ছোটাছুটি করতে লাগলো।
সে বললো " কে ওখানে?"
দুটি কোমল কন্ঠ একই সাথে জবাব দিলো " আমরা বৃষ্টি এবং রোদ। আমরা ভেতরে আসতে চাই! আমরা ভেতরে আসতে চাই!"
গোলাপ কুঁড়ি জবাব দিলো "ওহ প্রিয়! যদি তোমরা যদি দুজন একসাথে আসো তবে আমার মনে হয় তোমাদের ভেতরে আসতে দেয়া উচিৎ। "
সুতরাং সে খুব সামান্য ফাঁকা করে দরোজা খুললো এবং তারা ভেতরে আসলো । একজন তার ছোট্ট একটি হাত ধরলো এবং অপরজন তার অন্য ছোট্ট হাতটি ধরলো এবং তারা তার সাথে দৌড়াতে দৌড়াতে দ্রুত নীচ থেকে উপরে উঠে গেলো । তারা বললো "তোমার মাথা বের করো।"
সুতরাং সে তার মাথা বের করলো এবং একটি চমৎকার বাগানের মাঝে প্রবেশ করলো।
তখন বসন্তকাল এবং অন্য সব ফুল তাদের মাথা বের করে প্রস্ফুটিত হয়েছে এবং পুরো বাগানের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ফুল ছিলো গোলাপি রঙের ছোট্ট গোলাপটি।
Comments
Post a Comment