Posts

Showing posts with the label ময়ূরী মিত্র

ময়ূরী মিত্রের গল্প

Image
কাঁদে না দজ্জাল   সে বার বহুদিন অনুপস্থিতির পর জলদি জলদিই মায়ের হাত ধরে স্কুল চলে এল দজ্জাল | গেটে ঢোকার মুখে দেখি ---স্কুলের পাঁচিলে বসে মায়ের ফোন নিয়ে কার কাছে যেন তার স্কুলকর্মের ধারাবিবরনী দিচ্ছে | তার মা বললেন ---ফোনে তার পিসি | স্কুলে এসে পিসিকে ফোন করা চাইই তার | আমি ঢুকতেই ফোনের ওপারে পিসিকে বলল ----" ওই ময়ূরী এল | আজ পড়াশুনো গেল আমাদের |" বুঝুন ----

ময়ূরী মিত্রের গল্প

Image
মা নৌকোয় খুকু মাঝি  ১ নৌকায় দুলতাম ৷ জল বাজাত বাজনা --ছলাৎ ছলাৎ ৷ বর্ষাজলে ভরা আমাদের বেলগাছিয়া বাড়ির সেই গলিপথ ৷ আমায় কোলে নিয়ে সে জল পারাপার করছেন মা - পাছে স্কুলের জুতো মোজা না ভিজে যায় ৷ নদী দেখা তখনো হয়নি আমার ৷ দেখা হয়নি একটি পূর্ণ --অহর্নিশি বয়ে যাওয়া জলরাশি ৷ জলযানের চলাচল ৷ তাই বর্ষার জল নামলেই ভাড়াবাড়ির ঐ গলিটাই হয়ে যেত আমার নদী ৷ হয়ে যেত চোখের পাতা ফেলতে না ফেলতেই ৷ ধরুন - বেলাবেলি আকাশ মন করেছে জল ঝড়াবে ৷ আর আমি চোখ বুজে ঘাপটি মেরে আছি কখন আমার চলার রাস্তাটি হয়ে উঠবে নদী ৷ আমি বলতাম গলিনদী ৷ আমার বয়সী খুকুরা রাস্তায় জল জমলে কাগজের খেলনা ভাসাত ৷ আর আমি মায়ের কোলে চড়ে জলরাস্তা পার হতে হতে মাকেই ভাবতাম নৌকা ৷ সেসময় মায়ের কোলে চড়ার স্টাইলটাই বদলে যেত আমার ৷ দু’পা ছড়িয়ে দিতাম মায়ের মাংস পেটের দুপাশে ৷ আর লালরঙা পিঠে সমানে চাটিয়ে যেতাম দুহাতের তেলো দিয়ে ৷ আমার হাত বৈঠা আর আমার দাঁড় টানা ৷ যদি পড়ে যাই ---- পিঠে লাগা সত্ত্বেও মা হজম করতেন আমার মারকাটারি দাঁড় টানা ৷ গলি যত শেষ হতো, শুকনো পথ যত কাছে আসত, মায়ের পিঠে দাঁড়ের পিটুনি বাড়ত ৷ বাড়তে...

ময়ূরী মিত্রের গল্প : টিয়া ক কথা

Image
টিয়া ক কথা বছর দুই আগে ৷ বাসে করে স্কুল যাচ্ছিলাম ৷ মর্নিং স্কুল শেষ হচ্ছে তখন ৷ফলে বাসে স্কুলফেরত কিছু খুকির ভিড় জমল। একটা স্টপেজ থেকে পরপর সব উঠল ৷ একদম চুনো সাইজ আর জানেমন মিষ্টি মুখ ৷ স্কুল ছুটি হয়ে গেছে - এটুকু ভেবেই ক্ষণে ক্ষণে উল্লাস করছে তারা ৷ মুখ দিয়ে নানারকম হর্ষধ্বনি বার করছে ৷ মায়েরা ধমকাচ্ছেন -'বোকার মত হাসিস না' ৷ মুখ ফসকে বেরিয়ে যাচ্ছিল ... এদের মানেহীন হাসিতেই রয়েছে প্রাণ ৷ মানুষের মান ৷ জ্ঞান জ্ঞান শোনাবে বলে কিছু আর বললাম না ৷ একটি এসে বসল আমার ঠিক পাশে ৷ হাসছে ৷ ঝুঁটি নাড়াচ্ছে ৷ বাইরে মুখ বাড়িয়ে দেখতে চাইছে সব ৷ একসাথে কত কীই যে করে চলেছে মেয়েটা ৷ কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম --তুই এক্কেবারে একটা পাখি ৷ আমার কোলের পাখি ৷ ওমা ! শোনা মাত্তর আমার কোল ঘেঁষে বসল ৷ তার ঠাণ্ডা ঘাম আমার চামড়া ছুঁল ৷ হঠাৎ দেখি, সে তার ঠিক সামনের সিটের পিছনের টিনের পাতকে কখন যেন আয়না বানিয়ে নিয়েছে ৷ আর সেই আয়নায় নিজের মুখটাকে নিয়ে নানা পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে ৷ বাঁকিয়ে ভেঙ্গিয়ে ৷ কখনো বা সাপের মতো জিভ লকলক করে ৷ নিজেই নিজের সুন্দর হবার পরীক্ষা নিচ্ছে ৷ তার চেয়েও আমার কাছে যেটি বড় কথা বল...

ময়ূরী মিত্রের তিনটি গল্প

Image
  ১. কাপড় খোল মা স্বাধীনতার পর থেকে ভারতবর্ষে মূক বধিরদের ভাষা বা কথা জোগানোর পদ্ধতি নিয়ে সাতসতেরো মত তৈরি হয়েছে। হচ্ছেও। তর্কটাকে এখন আর অভিমতের দ্বন্দ্ব বলে মনে হয় না । বধির শিশুর বিশেষ প্রশিক্ষক হিসেবে এইসব মতামতের ভিন্নতাকে এখন সেরফ মর্জির ঝঞ্ঝাট বলেই মনে হয়।