গল্প একাত্তর - হারুন রশীদ

আলো হয় ভোর না হতেই ঘর থেকে বের হতে হলো হানিফকে। একটু দূরে নদীর তীরে ঝোপ-জঙ্গল। তার পাশেই কাজটা সারতে হবে। তখনো অন্ধকার পুরোপুরি কাটেনি। হালকা কুয়াশা ছড়িয়ে আছে চারপাশে। পথঘাট ঝাপসা লাগে। হানিফদের বস্তির একদিকে নদী অন্যদিকে বড় একটা জুটমিল। হানিফের বাবা সেই জুটমিলে ঝাড়ু দেয়। জুটমিলের সীমানা দেয়ালের উত্তরদিকে যে গলিপথ আছে সেদিকে পাঁচ মিনিট হাঁটলেই অনেকগুলো সারিবদ্ধ বেড়ার ঘর। এর একটিতে হানিফরা থাকে। নদীর তীরে যেতে হলে জুটমিলের পাশ দিয়ে যেতে হয়। কোথাও কোন লোক নেই। এখনো পাড়ার ঘুম ভাঙেনি। জুটমিলের বিশাল দেয়ালের পাশ দিয়ে যেতে যেতে গা শিরশির করে উঠলো হানিফের। মা বলে দশ বছরের দামড়া ছেলে এখনো একলা গিয়ে বাথরুম সারতে পারে না। তাদের বস্তি ঘরে বাথরুম নেই। সবাই নদীতীরের একটা ছাপড়াতে গিয়ে কাজ সারে। এলাকাটা শহর থেকে একটু দূরে। নিরিবিলি গ্রামাঞ্চল। কারখানা বন্ধ থাকলে তেমন কোন হৈ চৈ থাকে না। সামনে বড় রাস্তা দিয়ে মাঝে মাঝে দুয়েকটা গাড়ি ছুটে যায় সাঁই সাঁই করে। নইলে সারাদিন ঝিম মেরে থাকে পুরো এলাকা। এখান থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব অনেক। সে কখনো শহরে যায়নি। কদিন আগে বাপের সাথে যাবার কথা ছিল, ...