Posts

Showing posts with the label ফেব্রুয়ারী ২০২১

নাহার তৃণার গল্প

Image
 অ্যান্ড্রোক্লস আর সিংহের গল্প বহু বহু বছর আগে অর্থ-বিত্তে বলবান মানুষেরা গরীব মানুষদের সাথে ভারী নিষ্ঠুর ব্যবহার করতো। এখন যেমন পশুর হাটে গরু-ছাগল ইত্যাদি বেচা-কেনা হতে দেখো না তোমরা? ঠিক সেভাবে গরীবদের ধরে এনে বিক্রি করা হতো। তাদের দিয়ে অমানুষিক ভাবে খাটিয়ে নেওয়া হতো। এইসব অসহায় মানুষেরা ‘দাস’ হিসেবে পরিচিত ছিল। সেরকম এক দাসের গল্প এটা। সে বহুকাল আগের কথা। রোমে অ্যান্ড্রোক্লস নামে এক গরিব দাস থাকতো। তার মালিক ছিল খুবই নিষ্ঠুর প্রকৃতির। অ্যান্ড্রোক্লসের সাথে মালিকটা একটুও সদয় ব্যবহার করতো না। সে কারণে একদিন সুযোগ বুঝে অ্যান্ড্রোক্লস মালিকের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেল। পালিয়ে এসে বেশ কিছু দিন অ্যান্ড্রোক্লস হিংস্র পশুতে ভরপুর গভীর এক জঙ্গলে লুকিয়ে থাকলো। কিন্তু সেই বনে খাবার খুঁজে পাওয়া ছিল ভীষণ কষ্টের। দিনের পর দিন, ঠিক মতো খেতে না পেয়ে অ্যান্ড্রোক্লস দুর্বল আর অসুস্হ হয়ে পড়লো। তার মনে ভয় ধরলো এভাবে না খেয়ে থাকতে থাকতে ফট্ করে একদিন সে মরে যাবে। মরণটা যেন শান্তিতেই হয় সেরকম একটা চিন্তাতেই অ্যান্ড্রোক্লস কাছেই এক গুহায় কোনো রকমে হাঁচড়েপাচড়ে ঢুকে নেতিয়ে পড়লো। শরীর দুর্বল থাকায় অল্প স...

সাদিয়া সুলতানার গল্প

Image
ইচ্ছে বেলুন ফায়জা আধা ঘন্টা ধরে কান্না চেপে রাখার চেষ্টা করছে। কান্না চেপে রাখতে রাখতে ওর ছোট বুকের ভেতরটা ব্যথা করছে। ফায়জার মন খুব খারাপ। মা আজ ফায়জাকে মেরেছে। ফায়জার পিঠে চড় দিয়েছে মা। অথচ মা সবসময় বলে, বাচ্চাদের গায়ে হাত তোলা নিষেধ। সবসময় তাদের সুন্দর করে বুঝিয়ে বলতে হয়। অথচ মা নিজেই ওকে চড় দিয়েছে। যদিও মা খুব জোরে চড় দেয়নি। ফায়জা তাতে ব্যথাও পায়নি। তবু ফায়জার বুক ব্যথা করছে। বুঝতে পারছে ফায়জা ব্যথাটা পিঠে নয় বুকের ভেতরে লেগেছে। ঘটনাটা ঘটার পর থেকেই ফায়জার মা বালিশে মুখ গুঁজে আছে। কোথায় চড় খেয়ে ফায়জার কাঁদবার কথা তা না, মা’ই জোরে জোরে কাঁদছে। রাইসা চুপচাপ খাটে বসে টিভি দেখছে। যেন কিছু হয়নি। রাইসা ফায়জার তিন বছরের বড় কিন্তু রাইসার কর্মকা- দেখলে মনে হয় ও ত্রিশ বছরের বড়। বড় আপি হলে যে বড় ভাব করার সঙ্গে সঙ্গে কিছু কাজও করতে হয় তা রাইসা বোঝে না। এই যে মা যখন ফায়জাকে মারল তখন তো রাইসা এগিয়েই এলো না। উল্টো মিটিমিটি হাসল! যেন বেশ হয়েছে, মার খেয়েছে! আর ঠিক তখন শিলার মা এগিয়ে এসে ফায়জাকে কোলে তুলে না নিয়ে গেলে ফায়জার কান্না আর ঠেকানোই যেত না। শিলার মা ফায়জাদের বাসায় কাজ করে। শিলা ফায়জার সমান...

মাহবুব আজাদের গল্প

Image
  সিন্ধুর আর ইন্দুর শেরবাহারপুর জঙ্গলে বাঘ একদিন নদীতে পানি গিলতে গিয়ে দেখে, বিরাআআআট উঁচু এক জন্তু পাড়ে দাঁড়িয়ে। তার থামের মতো চারটা পা, কুলোর মতো দুটো কান, মুলোর মতো দুটো দাঁত, আর যেখানে নাক থাকার কথা, তার জায়গায় হাতের মতো এক মস্ত কী-একটা যেন। বাঘকে দেখে জঙ্গলে হরিণ-শম্বর-শূকর-বান্দর সবাই সেলাম ঠোকে, এমনকি জলের মস্ত কুমিরও তাকে সমঝে চলে, কিন্তু এই পেয়ারা গাছের সমান উঁচু জন্তুটার যেন কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই। নাকের-জায়গায়-মস্ত-হাতের-মতো ঐ কী-যেনটা দিয়ে সে নদীর জল শুষে টেনে আনমনে নিজের পিঠে ছিটিয়ে চলছে তো চলছেই।  বাঘ ভাবলো, হয়তো জন্তুটা ওকে দেখেইনি। কুঁতকুঁতে চোখ ব্যাটার, কতটুকুই বা দেখতে পায়? বাঘ তাই গলা খাঁকরালো একবার। সে খাঁকরানি শুনে দূরে ঝোপ থেকে পাখি উড়ে গেলো, নদীর উল্টো পাড়ে হরিণের দল তিড়িংবিড়িং করে লাফিয়ে শূকরের দলকে ডিঙিয়ে ছুট লাগালো বনের গহীনে, আর গাছে গাছে নানা জাতের বাঁদর কিচমিচ করে উঠলো, একটা পুঁটি মাছও নদী ছেড়ে তিড়িং করে লাফিয়ে উঠে ফের জলে ডুব দিলো, কিন্তু মস্ত জন্তুটা যেন পাত্তাই দিলো না বাঘকে। একটিবার ঘাড় ঘুরিয়ে কুলোর মতো কানদুটো খানিক নেড়ে সে হেঁকে উঠে বললো, “ভোঁওও...

শহীদ আলতাফ মাহমুদের স্মৃতি স্মারক

Image
একুশের পলাশ শাওন মাহমুদ ছেলেবেলা থেকে হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুুঁজতে খুঁজতে এক সময় বয়স হবার সাথে সাথে জোর করে মেনে নিতে হয়েছিল যে, সে আর ফিরে আসবে না। সে সময়গুলোতে আমাকে বুঝ দেয়া হয়েছিল সাভারের স্মৃতিসৌধ আমার বাবার কবর। সেই বিশালতা আমাকে মুগ্ধ করতো। বিস্মিত করতো। গর্বিত করতো। বুদ্ধি হবার পর জানতে পেরেছি এই স্মৃতিসৌধ শুধু বাবা নয়, একাত্তরে তিরিশ লাখ শহীদের জন্য উৎসর্গীত। সেখানে বাবার কবর নেই। তখন প্রশ্ন করতাম, তাহলে বাবা কোথায়! পুরো বাংলাদেশ জুড়েই কি বাবার কবর! গত দশ বছর ধরে অনেক ভাবনা ভেবেছি, কোথায় গেলে শুধুমাত্র বাবাকে পাওয়া যাবে। তাঁর সাথে কথা বলা যাবে। জানতে পারবো সত্যি সত্যি সে আর আসবে না। মৃত মানুষের কবর না হলে তাঁকে মৃত ভাবা যায় কি! গত পাঁচ বছর আগে 'সবুজ পাতা' নামে একটি সংগঠনের সাথে যোগাযোগ হলে আমি আমার মনে চাওয়াটা জানিয়েছিলাম। আমার চাওয়া ছিল বাবাকে গাছ হিসেবে দেখতে চাই। অনেক চিন্তার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আরেফিন স্যারের কাছে ভয়ে ভয়ে বলতে গিয়েছিলাম, শহীদ মিনারের একদম এক কোণায় একটা জায়গা খালি আছে। সেখানে বাবার নামে একটা গাছ বুনতে চাই। সে আমাকে পূর্ণ সমর্থন এবং স্ব...

কবিতা - জুয়াইরাহ বিনতে জুলফিকার

Image
  খেয়াল হঠাৎ এলো করোনা সবার মনে ভাবনা কী জানি কী হয় সবার মনে ভয়। মাঝামাঝি সময় করোনার কেউ পাত্তা দেয় না আর কেউ পরে না মাস্ক ধোয় না কেউ হাত। ভাবে করোনায় করেছে  তারা বাজিমাত এসব দেখে করোনা হাসে মানুষ নিজের খেয়ালেই ভাসে। ......................................... (সপ্তম শ্রেণি, বয়স-১৩)

সোফি পারোভি রেইনের ধারাবাহিক গল্প

Image
দু ’ টি বিড়ালের অভিযান-৩ মিল্কি আর কিছু করতে না পেরে পুকুর পাড়ে বসে পড়ে। সে চারদিক তাকাতে লাগলো। পানি দেখে তার ভয় লাগছিল। হঠাত সে পুকুরে আরেকটা বিড়াল দেখতে পেলো। ধবধবে শাদা। আসলে সেটা ছিল মিল্কির প্রতিবিম্ব। মিল্কি তাঁকে দেখে জিজ্ঞেস করে, “এই তুমি কে? তোমার নাম কী?” বিড়ালটি কোন উত্তর দিল না “এই তুমি কথা বলছ না কেন?” মিল্কি আবার জিজ্ঞেস করলো। এইবার মিল্কি বোকার মত তাকে ধরতে গেলো আর পড়ে গেলো পুকুরের পানিতে। সে অনেক চেষ্টা করলো সাঁতার কাটতে কিন্তু ডুবে গেলো গভীর পানিতে। ছটফট করতে করতে সে জ্ঞান হারাল। কিন্তু জ্ঞান হারানোর আগে সে বুঝতে পারলো কে যেন তাকে কামড়ে ধরেছে। সেই পুকুরে থাকতো এক বোয়াল মাছ। সে অনেকক্ষণ ধরে বিড়ালটাকে লক্ষ্য করছিল। বিড়ালটার পড়ে যাওয়া সে দেখেছে। সে বিড়ালটাকে অনেক কষ্ট করে পানি থেকে তুলে পুকুরের পাড়ে এনে রাখল। বোয়াল মাছটি পানি থেকে বিড়ালটিকে দেখতে লাগলো। সে অপেক্ষা করতে লাগলো বিড়ালটির জ্ঞান ফেরার জন্য। এদিকে লিলি খুঁজে পাচ্ছে না সিল্কি আর মিল্কিকে (আসলে যে জিনজার)। সে কেঁদে কেটে একাকার করে রেখেছে পুরো বাসা। বাসার সবাই তাদের কমতি অনুভব করছিল। দুষ্টু খালাও মন খারাপ করে কা...