Posts

Showing posts with the label এপ্রিল ২০২১

বাংলা নববর্ষ

Image
পহেলা বৈশাখ কিভাবে এলো? আঁকিয়ে : ওয়ারিশা মানহা পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ আমাদের সংস্কৃতিতে কিভাবে এলো? পহেলা বৈশাখ পালন করা হয় বাংলা বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে। প্রাচীন কাল থেকেই সৌর পঞ্জি অনুসারে বাংলা মাস পালিত হতো। বাংলা সনের প্রবর্তন নিয়ে সম্রাট আকবর বেশি আলোচিত হলেও, বাংলা পঞ্জির উদ্ভাবক ধরা হয় আসলে ৭ম শতকের রাজা শশাঙ্ককে। পরবর্তীতে সম্রাট আকবর সেটিকে পরিবর্তিত করেন খাজনা ও রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে। প্রথমে আকবরের পঞ্জিকার নাম “তারিখ-এ-এলাহী” আর ঐ পঞ্জিকায় মাসগুলো আর্বাদিন, কার্দিন, বিসুয়া, তীর এমন নামে ছিল। তবে ঠিক কখন যে এই নাম পরিবর্তন হয়ে বৈশাখ, জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়, শ্রাবণ হলো তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারে না। ধারণা করা হয় যে, বাংলা বারো মাসের নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন নক্ষত্র থেকে। যেমন- বিশাখা নক্ষত্র থেকে বৈশাখ, জায়ীস্থা থেকে জৈষ্ঠ্য, শার থেকে আষাঢ়, শ্রাবণী থেকে শ্রাবণ এমন করেই বাংলায় নক্ষত্রের নামে মাসের নামকরণ হয়।

মোহিত কামালের গল্প

Image
টুঙ্গিপাড়ার হিমালয় পুকুরপাড়ে আছে একটা আমগাছ। ঝাঁকড়া মাথার গাছটার একটা ডাল পুকুরের পানির ওপর ঝুঁকে আছে। ডালের সবুজ পাতারা চিকচিক করছে ভোরের কাঁচা সোনা রোদের পরশ পেয়ে। পাতার আলো প্রতিফলিত হচ্ছে পানিতে, ঝিকমিক করছে। পানিতে বয়ে যাওয়া চোখ ধাঁধানো দৃশ্যটা মনোযোগ দিয়ে দেখছে ডালে বসা একটা মাছরাঙা পাখি। আর পুকুরঘাটে বসে পাখির দিকে চেয়ে আছে এক কিশোর, খোকা। মাছরাঙাটার দেহের তুলনায় মাথা বড়ো। লম্বা, ধারালো, চোখা ঠোঁট, খাটো পা আর খাটো লেজ রয়েছে ওর। গায়ের রং উজ্জ্বল। পাখনায় আর মাথায় নীলের ওপর ফিরোজা রঙের বুটি, চোখের নিচ থেকে লাইনের মতো মেরুন-সাদা রঙের মেশানো টানটা সুন্দর। আর বুকের দিকটা সোনালি রঙের! সুন্দর পাখিটা প্রাণভরে দেখতে মোটেও ক্লান্তি লাগছে না। মাছরাঙার চোখের নিশানা পানিতে, আর খোকার নিশানা মাছরাঙার মনোযোগী চোখের দিকে। তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার মনে পড়ে গেল দাদুর বলা-কথা। দাদুভাই বলেছিলেন, ‘তিন রকম মাছরাঙা আছে : গাঙ মাছরাঙা, পান মাছরাঙা আর গেছো মাছরাঙা। এটা গেছো নাকি পান মাছরাঙা, দেখে চিনতে পারল না খোকা। ধরে নিল গাছে বসা মাছরাঙাটা আসলে গেছো মাছরাঙা।

নাহার তৃণার অনুবাদ গল্প

Image
  ক্ষীণদৃষ্টির ভাইদের গল্প চীন দেশের এক শহরের শেষপ্রান্তে বিশাল এক বাড়িতে তিন ভাই বাস করতো। তিন ভাইয়েরই চোখের অবস্হা ছিল বেশ খারাপ। চোখে ভালো দেখতে না পারার কারণে তিন ভাই তাদের ব্যবসাবাণ্যিজ্য ঠিকঠাক দেখাশোনা করতে পারতো না। বিশেষ করে টাকা-পয়সা লেনদেনের ব্যাপারটা। ছোট ভাই ঠিক করলো, এখন থেকে সে টাকা পয়সার দিকটা দেখাশোনা করবে।  তাই সে বাকি ভাইদের উদ্দেশ্য করে বললো , "বড় ভাইয়ের চোখের অবস্হা খুবই খারাপ, তিনি ঠিক মতো দেখতেই পান না কত টাকা তাকে দেয়া হলো বা তিনি অন্যকে কত দিলেন।" সে আরো বললো। "লোকেরা তার দুর্বলতার সুযোগ নেবার চেষ্টা করে।" "তুমি যেন কত্ত দেখো চোখে," টিটকারি দিয়ে ওঠলো মেজো ভাই। "যদি এমনটা চিন্তা করে থাকো, যে আমাদের টাকাপয়সার লেনদেন তারই করা উচিত যে আমাদের মধ্যে চোখে সবচে' ভালো দেখে, তাহলে আমি বলবো সেটি হচ্ছি আমি। টাকা পয়সা লেন-দেনের দায়িত্বটা আমাকেই দেয়া উচিত। কারণ তোমাদের দু'জনের চেয়ে আমার চোখের দৃষ্টি অনেক ভালো।"

লুৎফর রহমান রিটনের ছড়া

Image
একটি 'শাদা-কালো' ছড়া সাবরিনাদের দুইটা বেড়াল একটা কালো একটা শাদা, নরম নরম সিল্কি পশম একটা দিদি একটা দাদা। সারাক্ষণই মিয়াও মিয়াও সাবরিনাদের কোলটি ঘেঁষে, সাবরিনারাও করতে থাকে কচলা কচলি, ভালোবেসে। দুইটা বেড়াল খুব আদুরে খুব পছন্দ খাদ্যি-খাবার, যেটাই পাবে লাফিয়ে খাবে চাকুম চুকুম করবে সাবাড়।

ফাহরিয়াল রহমানের ছড়া

Image
ভাল্লাগে না  লকডাউন আর ভাল্লাগেনা ধ্যাত-তারিকা ছাই! অনলাইনে ক্লাস করি  ঘুমাই আর খাই। পড়ার চাপটা বেড়েই চলছে মনের চাপও তাই, তোমায় আর চাই না 'করোনা' চলে যাওনা ভাই!    

প্রতিভা সরকারের গল্প

Image
  পাইনামা আমার হাতের সঙ্গে পিঠ লাগিয়ে না ঘুমোলে আমার পাইয়ের ঘুমই আসে না। পাই হচ্ছে আমাদের পাই, বেড়ালদের সেই রাণী, যাকে পনের/ষোল দিন বয়সে আমার মেয়ে স্কুলের নর্দমা থেকে কুড়িয়ে এনেছিল। ওকে নাকি কাদাজল মাখা অবস্থায় কাকে ঠোকরাচ্ছিল। তাই দেখে খুব কষ্ট হওয়ায় মেয়ে ওকে টিফিন বাটি নেবার প্লাস্টিক ব্যাগে পুরে নিয়ে এসেছিল। সেই থেকে পাই আমাদের সঙ্গে আছে। আমাদের মেয়েই হয়ে গেছে। বাংলা ভাষাটা তো স্রেফ গুলে খেয়েছে। সব বোঝে এবং বোঝাতে পারে। হয়ত ওর সামনেই কাউকে চেঁচিয়ে বললাম, ওরে ওষুধের শিশিটা নিয়ে আয় তো, পাইয়ের খাবার সময় হয়েছে। অমনি সে সুড়ুৎ করে খাটের তলে ঢুকে পড়ল। সেখান থেকে তাকে বার করে কার সাধ্যি ! ওষুধ খেতে তার বড় আপত্তি।

আহমেদ খান হীরকের গল্প

Image
 কেশবতীর বিবাহ এক যে ছিল রাজা। রাজার ছিল সুন্দরী এক কন্যা! কন্যার নাম কেশবতী। কেশবতী কন্যার হলো বিয়ের বয়স। রাজা ডাকল রাজঘটককে। ঘটকমশাই ও ঘটকমশাই! কন্যার যে বিয়ে দিতে হয়! ঘটক বলল, চিন্তা কী! এই না বলেই রাজঘটক তার ইয়াব্বড় ল্যাপটপটা খুলে ফেলল। ভেতর কত্ত পাত্রের ছবি! ক্ষিররাজ্যের ক্ষির রাজপুত্র তো মিষ্টিপুরের চমচম রাজপুত্তুর! ফজলি শহরের আমজাদা তো রুইনগরীর একেবারে চ্যাংড়া ট্যাংড়াকুমার!   শত শত রাজপুত্তুর... কিন্তু কেশবতীর মুখে রা নেই। একটু হাসিও নেই। নাহ, কাউকেই তো পছন্দ হলো না! রাজঘটক বলল, সর্বনাশ! রাজা বলল, সর্বনাশ! পুরো রাজ্য বলল, সর্বনাশ! তাহলে কি কেশবতীর বিবাহ হবে না!

ফারিহা শাহরিনের গল্প

Image
  দুটো পাখি আমাদের বাগানে রোজ পাখি দুটো আসে। উড়ে এসে বসে একটা গাছে। বাগানে এত গাছ আছে, কিন্তু তাদের পছন্দ একটি গাছ। আমি চুপি চুপি প্রতিদিন দেখি। জানালার পর্দা সরিয়ে চুরি করে দেখি। বাগানে গেলে পাখি দুটো উড়ে চলে যায়। পাখিরা মানুষকে বিশ্বাস করে না। অথচ আমি তো তাদের পছন্দ করি ভালোবাসি। কিছুতেই বুঝে না বোকা পাখি। তাই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখি তাদের। দুজন মিষ্টি সুরে কথা বলে গান গায়। আমি কিন্তু শুনতে শুনতে বুঝে গেছি কোনটা গান আর কোনটা কথা। যখন কথা বলে তখন ওরা টিট টাট টিট টাট এরকম শব্দ করে। দুজনই একসাথে টিট টাট করতে থাকে। আর যখন গান গায় তখন টিউউউউ, টিউউউউউ এরকম একটা সুর করে। গান কিন্তু দুজনে গায় না। শুধু একটা পাখি গান গাইতে পারে। অন্য পাখিটা কান পেতে শোনে। চুপ করে বসে থাকে। একদিন আমার ইচ্ছে হলো পাখি দুটোকে খাবার দেবো। ওরা কী খায় আমি তো জানি না। বাগানে কত পোকামাকড় আছে সেগুলা খাবে কিনা। খেলেও তাদের তো দিতে পারবো না। আমি পোকামাকড় বড় ভয় করি। যদি কামড়ে দেয়। তাই বুদ্ধি করে একদিন একটা বাটিতে করে মুড়ি দিয়ে আসলাম গাছের নীচে। কিন্তু দেমাগী পাখি ছুঁয়েও দেখলো না। তাকিয়েও দেখে না। পরদিন বিস্কুটের গুড়ো দিলা...

সাইফুদ্দিন মাহমুদের গল্প

Image
  নাদু ভাই নিয়ামুল ক্লাস ফাইভের লাস্ট বেঞ্চিতে বসে সবসময়। বসে বলাটা শুদ্ধ হলো না। তাকে সবসময় পেছনের বেঞ্চিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। দেখতে দেখতে প্রতিদিন সবাই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। প্রথম দিকে এটা নিয়ে হাসাহাসি হতো। বছরের শুরুতে যখন ক্লাস ফাইভের ক্লাস শুরু হয় তখন মাসখানেক এই দৃশ্য দেখে নতুন ওঠা ক্লাস ফাইভের ছেলেরা হেসে ফেলতো।  ক্লাস ফাইভে সবাই নতুন। শুধু নিয়ামুল ছাড়া। নিয়ামুল গত তিন বছর ধরে ক্লাস ফাইভে পড়ে যাচ্ছে। প্রথমবার তার সাথে যারা ফাইভে উঠেছিল সেই বন্ধুগুলো এখন ক্লাস এইটে উঠে গেছে। কিন্তু বছরের পর বছর ফেল করতে করতে নিয়ামুল ফাইভেই থেকে গেছে। ফাইভে থেকেই সে সবার চেয়ে প্রায় পৌনে এক ফুট লম্বা হয়ে গেছে। তাকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে না কারণ সে এই স্কুলের দফতরির ছেলে। দয়া করে তার নামটা এখনো রাখা হয়েছে। পেছনের বেঞ্চিটা নিয়ামুলের পছন্দ ছিল শুরু থেকেই। পড়া না পারলে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকার যে লজ্জা সেটা পেছনের বেঞ্চিতে কম লাগে। সবাই সামনের দিকে তাকিয়ে ক্লাস করে। পেছনের দিকে তাকালে শিক্ষকের বকা শুনতে হয়। তাই নিয়ামুল পেছনের বেঞ্চিতে একা বসতে পছন্দ করে। আসলে সে ততক্ষণই বসে যতক্ষণ ক্লা...