Posts

Showing posts with the label মুক্তিযুদ্ধ

একাত্তরের গণহত্যা - হাসান মোরশেদ

Image
মুক্তিযুদ্ধ : গবেষণা ও অনুসন্ধান এইখানে শুয়ে আছেন শহীদ অজিত চক্রবর্তী   ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে।   শায়েস্তাগঞ্জের কাছাকাছি  হবিগঞ্জ সদর উপজেলার চক্রমনাত গ্রাম। এই গ্রামের সামনে দিয়েই তখন হবিগঞ্জ-বাল্লা রেল লাইন চালু ছিলো। হিন্দুপ্রধান এ গ্রামে প্রায়ই পাকিস্তান আর্মির ছোট ছোট দল এসে হানা দিতো মুলতঃ নারী নির্যাতনের উদ্দেশ্যে।  এদিকে তখনও মুক্তিবাহিনীর সংগঠিত প্রতিরোধ শুরু হয়নি।  পাক আর্মির অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামের মানুষেরা- হিন্দু মুসলমান সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেন ,যার যা আছে তাই নিয়েই প্রতিরোধ গড়বেন।  এরকম আরেকদিন পাকিস্তান আর্মির কয়েকজন সৈনিক এসে হিন্দু পাড়ায় ঢুকে নারী নির্যাতন করে ফিরে যাবার সময় গ্রামের মানুষেরা লাঠি, শাবল, লাঙ্গল হাতে নিয়ে তাদেরকে তাড়া করেন। গ্রামবাসীর সামনে ছিলেন স্থানীয় সুকড়িপাড়া হাইস্কুলের ছাত্র অজিত চক্রবর্তী। আর্মিরা রেললাইন ধরে দৌড়ে গিয়ে একটা ব্রীজের পাশে পজিশন নিয়ে গুলীবর্ষন শুরু করে। অজিত  সহ কয়েকজন ভয় না পেয়ে সামনে এগিয়ে গেলে, অজিত গুলীবিদ্ধ হন...

গল্প একাত্তর - বাদল সৈয়দ

পরাজয় বেশ বড়সড় কক্ষটার চারিদিক বেশ অন্ধকার। শুধু মাঝখানটায় তীব্র পাওয়ারের একটা বাল্ব সরাসরি তাঁর নিচের চেয়ারটার উপর পড়েছে।   অন্ধকার এক কোনায় একটা টেবিল ঘিরে তিনজন মানুষের  ছায়া দেখা যাচ্ছে। তাদের সামনে একটা ইলেক্ট্রিক প্যানেল। মাঝখানে  যিনি বসে আছেন তিনি  কর্নেল সেকান্দার খান। আলোতে গেলে বোঝা যাবে  তিনি একজন অসম্ভব সুদর্শন মানুষ। আজ তাঁর মনটা ও খুব ভাল। খুব ভাল। তিনি আনন্দিত চোখে আলোর নিচে চেয়ারে শুয়ে থাকা যুবকের দিকে তাকালেন। তীব্র আলোয় মানুষটির খুব কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু কিছু করার নেই, কারণ তার চোখের পাতা পিন দিয়ে গেঁথে দেয়া হয়েছে যাতে তা বন্ধ করা না যায়। হাত পা শক্ত করে প্যাড লাগানো রশি দিয়ে চেয়ারের সাথে বাঁধা। তাঁর পেটের উপর দুটো ইস্পাতের মাকড়সা নিরীহ ভঙ্গিতে  বসে আছে।

গল্প একাত্তর - হারুন রশীদ

Image
আলো হয় ভোর না হতেই ঘর থেকে বের হতে হলো হানিফকে। একটু দূরে নদীর তীরে ঝোপ-জঙ্গল। তার পাশেই কাজটা সারতে হবে। তখনো অন্ধকার পুরোপুরি কাটেনি। হালকা কুয়াশা ছড়িয়ে আছে চারপাশে। পথঘাট ঝাপসা লাগে। হানিফদের বস্তির একদিকে নদী অন্যদিকে বড় একটা জুটমিল। হানিফের বাবা সেই জুটমিলে ঝাড়ু দেয়। জুটমিলের সীমানা দেয়ালের উত্তরদিকে যে গলিপথ আছে সেদিকে পাঁচ মিনিট হাঁটলেই অনেকগুলো সারিবদ্ধ বেড়ার ঘর। এর একটিতে হানিফরা থাকে। নদীর তীরে যেতে হলে জুটমিলের পাশ দিয়ে যেতে হয়। কোথাও কোন লোক নেই। এখনো  পাড়ার ঘুম ভাঙেনি। জুটমিলের  বিশাল দেয়ালের পাশ দিয়ে যেতে যেতে গা শিরশির করে উঠলো হানিফের। মা বলে দশ বছরের দামড়া ছেলে এখনো একলা গিয়ে বাথরুম সারতে পারে না। তাদের বস্তি ঘরে বাথরুম নেই। সবাই নদীতীরের একটা ছাপড়াতে গিয়ে কাজ সারে।  এলাকাটা শহর থেকে একটু দূরে। নিরিবিলি গ্রামাঞ্চল। কারখানা বন্ধ থাকলে তেমন কোন হৈ চৈ থাকে না। সামনে বড় রাস্তা দিয়ে মাঝে মাঝে দুয়েকটা গাড়ি ছুটে যায় সাঁই সাঁই করে। নইলে সারাদিন ঝিম মেরে থাকে পুরো এলাকা। এখান থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব অনেক। সে কখনো শহরে যায়নি। কদিন আগে বাপের সাথে যাবার কথা ছিল, ...