Posts

Showing posts with the label অনিন্দিতা গোস্বামী

অনিন্দিতা গোস্বামীর ধারাবাহিক উপন্যাস

Image
অবাক পৃথিবী পর্ব-৭ (পূর্ব পাঠের পরে) এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন হাত জোড় করে মঞ্চের সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। রোরো দেখল তার মধ্যে তার বাবাও আছে। ভিড়ের মধ্যে তার বাবাকে দেখে হা হয়ে গেল রোরো। বিপদের মুহূর্তে মানুষ এত দুর্বল হয়ে যায় ! তার বাবাকে তো সে কোনদিন ঠাকুর প্রণাম করতেও দেখেনি, তার কেমন যেন কান্না পেল, সে মায়ের ওড়নায় টান দিয়ে বলল, মা পাপ কাকে বলে? তার মা বলল,অন্যায়কেই বলে পাপ। আমরা কি সত্যিই তবে পাপ করেছি? সেই জন্যেই কি পৃথিবীটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে? তার মা অরণ্যা বলল,তা হয়তো করেছি রে। রোরো বলল, কীরকম? অরণ্যা হাত দিয়ে মুখের হাঁই চাপা দিতে দিতে বলল,তুই সেটা ভালো করেই জানিস রোরো।আমরা কি পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্র মানে তোর ওই ইকোসিস্টেমের দিকে কোন রকম নজর রেখেছিলাম? পৃথিবীতো ধ্বংস হবারই ছিল রে রোরো,শুধু আজ নয় কাল।শুধু কি তাই রোরো মানুষ বিজ্ঞানকে কিভাবে অশুভ কাজে ব্যবহার করেছে বারবার!পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছে, পৃথিবীর কোথাও না কোথাও তো সারা বছর ধরেই যুদ্ধ চলে,কাঁটাতারের বেড়া আর সীমানাপ্রাচীরে তো আমরা পৃথিবীটাকে খণ্ড-বিখণ্ড করেছি।

অনিন্দিতা গোস্বামীর ধারাবাহিক উপন্যাস : অবাক পৃথিবী

Image
অবাক পৃথিবী পর্ব - ছয়: বেশ একটা বোঁটকা গন্ধ চারিদিকে। ঘরের কোণে মশালের মত ছোট্ট একটা আলো। জ্যাকলিনের মনে পড়লো সে বইয়ে পড়েছিল এটা সীল মাছের চর্বি। মস্ত বড় একটা হ্যান্ডকি নাকের ওপর চেপে ধরে বসে আছে তার মা। জ্যাকলিন দেখল ঘরের আর এক কোণে বাচ্চাদুটো বসে বসে কী যেন চিবিয়ে চলেছে, প্রেসিডেন্ট বললেন, ঐ দেখো ওরা চামড়া চিবিয়ে ট্যান করছে।  জ্যাকলিন জেরীকে বলল, চলো জেরী ওদের সঙ্গে ভাব করি। জুলিয়া নাক থেকে রুমাল সরিয়ে ধমকে উঠল জ্যাকলিনকে, নো, ভীষণ নোংরা ওদের গায়ে। প্রেসিডেন্ট বললেন, আহা যাক না এখন তো ওদের সঙ্গেই থাকতে হবে আমাদেরকে। এবার জুলিয়া তার সমস্ত আভিজাত্য ভেঙে চেঁচিয়ে উঠল একেবারে, হাউ লং? কতদিন? এভাবে বাঁচার কি আমাদের খুবই দরকার ছিল? প্রেসিডেন্ট বললেন, এভাবে বলছ কেন জুলিয়া ,পৃথিবীতে এই জায়গাটাই এখন একমাত্র নিরাপদ। মেরু অঞ্চলের এই জায়গাটাই এখন সবচেয়ে ধীর গতিতে সরছে। তাছাড়া এখানে এত পুরু বরফের স্তর যে কোথাও ধাক্কা লাগলে তা ঢালের মতো করে রক্ষা করবে দেশটাকে। জুলিয়া বললো, তোমাকে না দেশের লোক প্রেসিডেন্ট বানিয়েছে! কত আশা ভরসা নিয়ে সর্বোচ্চ আসনে বসিয়েছে তাদের রক্ষা করার জন্য! আর ...

অনিন্দিতা গোস্বামী'র ধারাবাহিক উপন্যাস: অবাক পৃথিবী

Image
অবাক পৃথিবী পর্ব পাঁচ জ্যাকলিন বাবার কাঁধে মাথা রেখে কাঁদো কাঁদো স্বরে বলল, আর কতক্ষণ আমরা এভাবে আকাশে ঘুরপাক খাবো বাবা? আমার শরীর খারাপ করছে।

অনিন্দিতা গোস্বামীর ধারাবাহিক উপন্যাস

Image
         অবাক   পৃথিবী                                              পর্ব- চার এতক্ষণ মুখে কোন কথা ছিল না কারো। কিন্তু খবর শেষ হতেই হাউমাউ করে উঠল সকলে,এখন কি হবে?আর কত দূরে ঐ অস্ট্রেলিয়া দেশটা?ঠিক কতক্ষণ পরে মুখোমুখি সংঘর্ষ হবে দেশ দুটোর? একটা ট্রেন এত কিলোমিটার বেগে আসছে আর একটা ট্রেন অত কিলোমিটার বেগে আসছে, ঠিক কতক্ষণ পরে মুখোমুখি দেখা হবে ট্রেন দুটোর !

অনিন্দিতা গোস্বামী'র ধারাবাহিক উপন্যাস

Image
অবাক পৃথিবী   (গতসংখ্যার পর) পর্ব - তিন   মলি রায় ওরফে চকলেট দিদা টুকটুক করে মঞ্চের পাশ দিয়ে হেঁটে নিজের জায়গায় ফিরছিলেন। খপ করে মলি দিদার দুহাত চেপে ধরলেন জ্যোতি জেঠু, বললেন চলে গেলে তো চলবে না,এখনো অনেক বাচ্চা বলছে ওদের অনেক প্রশ্ন আছে।যে কোনো বক্তৃতার শেষেই তো প্রশ্ন উত্তর পর্ব হয়,চলুন আমরা বরং দুজনেই গিয়ে মঞ্চে দাঁড়াই,যে যার মতো উত্তর দিই। প্রথমটায় খুব রাগ হচ্ছিল আপনার ওপর কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম নিজের দুর্বলতাটা স্বীকার করে নেবার মধ্যে একটা আনন্দ আছে।মলি দিদা বললেন কিন্তু ওরা তো এখন গান গাইছে।জ্যোতি জেঠু বললেন, তা গাক না,ওদের গান শেষ হলেই না হয় উঠব বরং।

অনিন্দিতা গোস্বামীর ধারাবাহিক উপন্যাস

Image
অবাক  পৃথিবী                         (গত সংখ্যার পর) দুই ই তিমধ্যেই পাড়ার কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়ের দল মঞ্চের ওপরে ব্যাটারির সাহায্যে ফিট করে ফেলেছে একটা মাইক এবং দুপাশে দুটো টিমটিমে আলো। দাদা দিদিদের এ হেনো ব্যবস্থায় রোরো এবং তার বন্ধুরা খুবই খুশি।ঘোষকের দায়িত্ব নিয়েছে শায়কদা।শায়কদা বলল,মৃত্যু যখন আমাদের আসন্ন,আমরা যখন মরবই তখন ভয় পাব কেন?জন্মিলে মরিতে হবে,অমর কে কোথা কবে?অন্য দাদারা পিছন থেকে আওয়াজ দিল,আগে।

অনিন্দিতা গোস্বামীর ধারাবাহিক উপন্যাস

Image
অবাক  পৃথিবী     প্রথম পর্ব   কার্পেটের ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে ম্যাপ পয়েন্টিং করছিল রোরো আর লেখার টেবিলে বসে লিখছিল তার মা ।   হঠাৎ মেঝেটা যেন কেমন সরসর করে উঠলো ,  চমকে তাকালো রোরো ,  মা !  ঘাড় ঘুরিয়ে অরণ্যা দেখল ছেলের দিকে ।   রোরোর চোখে তখন ভয় ,   উত্তেজনা আর খুশি মাখামাখি ।   অরণ্যাও হাসলো ছেলের চোখে চোখ ফেলে ,  বলল ,  হ্যাঁ রোরো ভূমিকম্প !  দেখ গ্লাসের জলটা এখনো কেমন কাঁপছে । রোরো বলল , এসো এসো মা , এখানে এসে বসো , দেখো কেমন উড়ন্ত গালিচার মতো লাগছে ।   ছেলের ডাকে টেবিল থেকে নেমে এলো অনু তারপর দুজনে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ল মেঝের ওপর ।   ওমা এতো দারুণ ব্যাপার ,  মনে হচ্ছে তারা যেন শূন্যে ভাসছে , উড়তে উড়তে চলেছে ডানাওয়ালা গরুড়ের মত ।   মুহূর্তকাল ,  তারপরেই ব্যস্ত হয়ে উঠে পড়ল অনু , বলল ,  এতক্ষণ ভূমিকম্প এক্ষুনি বারান্দায় গিয়ে শাঁখ বাজাতে হবে ।   তারপরেই নেমে পড়তে হবে রাস্তায় ।   রোরো যাওতো ঠাকুর ঘর থেকে শাঁখটা নিয়ে এসো ।