Posts

Showing posts from December, 2020

স্মৃতি একাত্তর - শাওন মাহমুদ

Image
  অলৌকিক মানুষ আমাদের অন্ধকার সময়ে এক মুঠো অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী মানুষ ছিল। তাঁদের সবার ছিল অপার্থিব গুণাবলী। কেউ কবিতা লিখতেন ,  গান বাঁধতেন ,  সুর তুলতেন ,  গান গাইতেন ,  সংবাদ কুড়াতেন ,  চিকিৎসা করতেন ,  শিক্ষা বিলাতেন ,  ঘর বানাতেন ,  নাটক লিখতেন ,  চলচ্চিত্র নির্মাণ করতেন ,  সবুজ ভালোবাসতেন ,  রাজনীতি করতেন। সেই সময়ে এঁরা সবাই একটা বিষয়ে দৃঢ় ঐক্যবদ্ধ ছিলেন ,  দেশকে ভালোবেসে দেশ স্বাধীন করবার সংকল্পের বিশ্বাসে অনঢ় অবস্থান।  ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু হয়েছিল তাঁদের আনাগোনা। ষাট দশকের আন্দোলন ,  মুক্তিযুদ্ধ উত্তরকাল এবং যুদ্ধচলাকালীন সময়ে তাঁরা এক হয়ে শত্রুর সাথে লড়াই করবার জন্য অদৃশ্য শক্তিশালী ঢাল সৃষ্টি করেছিলেন। যে যার পথে থেকেই তাঁরা এক ধারায় বাহিত হয়েছিলেন ,  দেশকে স্বাধীন করবার প্রত্যয় জলের নদীতে। যে যার মতন দায়িত্ব পালন করে ,  এক দৃঢ় লক্ষ্যে সফল হবার পরই আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন একটি স্বাধীন সার্বভৌম ব-দ্বীপ। যদিও জোরপূর্বক প্রস্থান করতে হয়েছিল তাঁদের। বীরের বেশে তাঁরা সেই অদৃশ্য ঢালের আড়ালে আম...

গল্প - হুমায়ূন কবীর ঢালী

Image
ঘুড়ি উড়ছেই এক. সকাল থেকে অপুর কোনো খোঁজ নেই। সেই যে সাতসকালে দুটো রুটি খেয়ে বেরিয়েছে ছেলেটা ,  বেলা গড়িয়ে বিকেল ,  সন্ধ্যা হয় হয় ,  তবু বাড়ি ফেরার তাড়া নেই। মাঠ থেকে যে গরু-বাছুর আনতে হবে সেই কথাও বেমালুম ভুলে গেছে। গোয়ালঘরে বাঁশের খুঁটিতে গাভীটাকে বাঁধতে বাঁধতে ভাবল মাসুদা বেগম। গাভীটার পাশে দাঁড়িয়ে আছে একমাসের বাছুর লালু। লালু নামটা অপুরই দেয়া। প্রথম যেদিন লালু পৃথিবীর বুকে পা রাখল ,  অপুর কী আনন্দ! সেদিনই অপু তার মাকে বলেছিল ,  মা ,  আমি ওর নাম রাখলাম লালু। বেশ তো তোর যা খুশি রাখ। আজ থেকে লালু আমার সাথী। ওকে নিয়ে তোমাদের একটুও ভাবতে হবে না। সেই থেকে লালুর দেখাশোনার ভার অপুর ওপর পড়ল। লালুর সাথে অপুর বেশ ভাব। চমৎ কার   বন্ধুত্ব।   কেউ   কাউকে   না   দেখে   একদিনও   থাকতে   পারে   না।   সকাল   হলেই   লালু   অপেক্ষায়   থাকে   কখন   অপু   আসবে।   মায়ের   সাথে   তা কে মাঠে নিয়ে যাবে। যেতে যেতে অপুর সাথে দুষ্টুমি করবে। লাফালাফি ,  ছুটোছুটি ,  লুটোপুটি ...

গল্প - মাহবুব আজাদ

Image
 কুঞ্জরা আর গুঞ্জরা “কুঞ্জরা একটা ছোট্ট হাতির ছানা...।” গল্পটা এভাবেই বলতে গেলাম আমার খুঁতখুঁতে ছোট্ট ভাগ্নে ঘুতুমকে। কিন্তু গল্পের প্রথম চরণ আমার মুখ থেকে মাটিতে পড়ার আগেই সে তার ডান হাতের তর্জনী তুলে আমাকে থামিয়ে দিয়ে বাম হাতের তর্জনী তুলে তার চশমাটা নাকের ডগা থেকে দুই সেন্টিমিটার ঠেলে ওপরে তুললো। এই বয়সেই ঘুতুমের চোখে কেন এমন পেল্লায় চশমা, আমি জানি না। কিন্তু আশেপাশে যা কিছু ঘটছে, সব কিছুর খুঁতই ঘুতুমের সে চশমার কাচে ধরা পড়ে। আর তখনই সে তর্জনী তুলে সবকিছু থামিয়ে প্রশ্ন করতে থাকে। “ছোট্ট হাতির ছানা, নাকি হাতির ছোট্ট ছানা?” ছোট্ট ঘুতুমের মুখে এমন প্যাঁচ-কষানো প্রশ্ন শুনে আমার মাথাটাই ঘুরে ওঠে। কিন্তু আমার বয়স চল্লিশ আর ঘুতুমের বয়স নয়, তাই ভয় পাই না। বলি, “কুঞ্জরার মা-ও বেশ ছোটখাটোই যদিও, কিন্তু তাকে ছোট্ট হাতি বলা চলে না। তোর কথাই সই, কুঞ্জরা এক হাতির ছোট্ট ছানা।” এবার ঘুতুমের চশমা স্বস্তির বাষ্পে একটু ঝাপসা হয়ে ওঠে। সে তর্জনীটা আস্তে আস্তে নামিয়ে আনে। আমি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে গল্প ধরে সামনে আগাই। “কুঞ্জরা থাকে এক পাহাড়ি জঙ্গলে। সে জঙ্গল এক দেশে শুরু হয়ে আরেক দেশ ফুঁড়ে অ...

গল্প - নিলয় নন্দী

Image
  টিনের সানাই টিনের সানাইটা গবা যে কীভাবে পেয়েছিল সেটা এখন আর কেউ ঠিক করে বলতে পারে না। ঘোষালদের বাড়ির মেয়ের বিয়ে হয়ে যাবার পরে বাজনাদাররা সব বাজনা-টাজনা গুছিয়ে নিয়ে চলে গেল। সেই সময় ফেলে গেল আধভাঙ্গা এই সানাইটা। ভুল করে রেখে গেল নাকি ইচ্ছে করেই ফেলে গেল সেটা বলা মুশকিল। গ্রামের অনেকেই বলে গোয়াল ঘরের পাশে শামিয়ানার কাপড় গুছিয়ে রাখার সময় জিনিসটা গবা কুড়িয়ে পেয়েছিল। বাজনাদারদের সঙ্গে ফাই ফরমাস খাটবে বলে যে ছোকড়াটা এসেছিল , সানাইটার মাথা একটু ভেঙ্গে যাওয়াতে সে ওটা ফেলে চলে যায়। গবা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ঘষে মেজে খুব কষে ফুঁ দিতে দিতে শেষপর্যন্ত সেটা থেকে আওয়াজ বের করে ফেলল। তারপর তার সানাই বাদনের চোটে শাজানপুর গ্রামবাসী সবাই ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠল। মাসখানেকের মধ্যে গ্রামে তার নাম হয়ে গেল সানাই গবা! গবা কিন্তু মোটেও এই সানাই থেকে কোন গানের সুর বের করতে পারে না। সেই নিয়ে তার কোন মাথা ব্যথাও নেই। সানাইয়ে যে আওয়াজ হয় সেটুকুই যথেষ্ট। ধানক্ষেতের মাঝখানে গিয়ে গবা গায়ের জোরে সানাইয়ে এক ফুঁ দেয়। সেই উদ্ভট শব্দে ভয় পেয়ে সেদিন কাকপক্ষীতেও আর ক্ষেতের ধারে কাছে আসে না। জমির মালিক হয় তো খুশি হয়ে গবাকে ...

একাত্তরের গণহত্যা - হাসান মোরশেদ

Image
মুক্তিযুদ্ধ : গবেষণা ও অনুসন্ধান এইখানে শুয়ে আছেন শহীদ অজিত চক্রবর্তী   ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে।   শায়েস্তাগঞ্জের কাছাকাছি  হবিগঞ্জ সদর উপজেলার চক্রমনাত গ্রাম। এই গ্রামের সামনে দিয়েই তখন হবিগঞ্জ-বাল্লা রেল লাইন চালু ছিলো। হিন্দুপ্রধান এ গ্রামে প্রায়ই পাকিস্তান আর্মির ছোট ছোট দল এসে হানা দিতো মুলতঃ নারী নির্যাতনের উদ্দেশ্যে।  এদিকে তখনও মুক্তিবাহিনীর সংগঠিত প্রতিরোধ শুরু হয়নি।  পাক আর্মির অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামের মানুষেরা- হিন্দু মুসলমান সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেন ,যার যা আছে তাই নিয়েই প্রতিরোধ গড়বেন।  এরকম আরেকদিন পাকিস্তান আর্মির কয়েকজন সৈনিক এসে হিন্দু পাড়ায় ঢুকে নারী নির্যাতন করে ফিরে যাবার সময় গ্রামের মানুষেরা লাঠি, শাবল, লাঙ্গল হাতে নিয়ে তাদেরকে তাড়া করেন। গ্রামবাসীর সামনে ছিলেন স্থানীয় সুকড়িপাড়া হাইস্কুলের ছাত্র অজিত চক্রবর্তী। আর্মিরা রেললাইন ধরে দৌড়ে গিয়ে একটা ব্রীজের পাশে পজিশন নিয়ে গুলীবর্ষন শুরু করে। অজিত  সহ কয়েকজন ভয় না পেয়ে সামনে এগিয়ে গেলে, অজিত গুলীবিদ্ধ হন...

গল্প একাত্তর - বাদল সৈয়দ

পরাজয় বেশ বড়সড় কক্ষটার চারিদিক বেশ অন্ধকার। শুধু মাঝখানটায় তীব্র পাওয়ারের একটা বাল্ব সরাসরি তাঁর নিচের চেয়ারটার উপর পড়েছে।   অন্ধকার এক কোনায় একটা টেবিল ঘিরে তিনজন মানুষের  ছায়া দেখা যাচ্ছে। তাদের সামনে একটা ইলেক্ট্রিক প্যানেল। মাঝখানে  যিনি বসে আছেন তিনি  কর্নেল সেকান্দার খান। আলোতে গেলে বোঝা যাবে  তিনি একজন অসম্ভব সুদর্শন মানুষ। আজ তাঁর মনটা ও খুব ভাল। খুব ভাল। তিনি আনন্দিত চোখে আলোর নিচে চেয়ারে শুয়ে থাকা যুবকের দিকে তাকালেন। তীব্র আলোয় মানুষটির খুব কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু কিছু করার নেই, কারণ তার চোখের পাতা পিন দিয়ে গেঁথে দেয়া হয়েছে যাতে তা বন্ধ করা না যায়। হাত পা শক্ত করে প্যাড লাগানো রশি দিয়ে চেয়ারের সাথে বাঁধা। তাঁর পেটের উপর দুটো ইস্পাতের মাকড়সা নিরীহ ভঙ্গিতে  বসে আছে।

স্মৃতি ১৯৭১ - নার্গিস আফরোজ বানু

  একাত্তরের স্মৃতি মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জীবনের এমন এক অধ্যায় , যার কথা একটি দিনের জন্যেও ভোলা যায়না । তোমরা জানো নিশ্চয়ই , আমাদের বাংলাদেশ সবসময় এই নামে পরিচিত ছিলনা । ভারতবর্ষে অত্যাচারী ইংরেজদের শাসনের অবসানে পাকিস্তান নামে যে দেশটি সৃষ্টি হয় , তাতে ছিল পশ্চিম পাকিস্তান আর পূর্ব পাকিস্তান নামে দুটি অংশ । আমরা ছিলাম এই পূর্ব পাকিস্তানের বা পূর্ব বাংলার মানুষ । কিন্তু স্বাধীন দেশের অংশ হলে কী হবে ,   পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের ভাগ্য ছিল খুবই খারাপ। তারা নতুন করে নির্যাতনের শিকার হলো পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকদের হাতে , যারা ছিল মূলত অবাঙ্গালী। বাঙ্গালীদের এরা খুব হীন চোখে দেখতো। সেই পশ্চিম পাকিস্তানীদের হাত থেকে রেহাই পেতে বাঙ্গালীকে আবার হাতে তুলে নিতে হলো অস্ত্র। সে অস্ত্র হাতে তুললো এদেশের সৈন্য , পুলিশ , কৃষক , শ্রমিক সব শ্রেণীর মানুষ। পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশে পরিণত করার যে যুদ্ধ সেই যুদ্ধকেই বলে মুক্তিযুদ্ধ। সব যুদ্ধই কষ্টের, ক্ষতির, মানবতা ধ্বংসকারী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধও ছিল খুব ভয়াবহ। পাকিস্তানীরা এমন বর্বর অত্যাচার করেছিল বাঙ্গালীদের উপরে যে সারা বিশ্ব স্...

গল্প - মৌলী আখন্দ

Image
পাখির বাসা   “ আম্মু আম্মু দেখ দেখ ওই দেখ একটা টি রেক্স! ” মীরা লামিয়ার আঙুল অনুসরণ করে তাকাল। সত্যিই এক টুকরো মেঘ ভেসে যেতে যেতে এমন একটা আকৃতি তৈরি করেছে মনে হচ্ছে যেন একটা টি রেক্স। মীরা নরম গলায় বলল, “ এই মেঘটার নাম কী মনে আছে? ” চার পেরোনো লামিয়া উৎসাহে চেঁচিয়ে উঠে বলল, “ আছে তো! কিউমুলাস মেঘ! ” মীরা হাতের ঝাঁঝরিটা নামিয়ে রেখে রেলিং এ হেলান দিয়ে দাঁড়াল। “ আর ওই পেছনে দেখ, কেমন জমাট বেঁধে আছে তুলোর মত! মনে হচ্ছে মেঘের উপর একটা প্রাসাদ! ”

গল্প - তন্বী হালদার

Image
ঝিমলির স্বপ্ন   নতুন ফ্ল্যাটে এসে দাদু ঝিমলিকে বলেছিল, ‘ জানিস ঝিমলি এই ফ্ল্যাটটা এখন যেখানে আছে, আগে এখানে এমন জঙ্গল ছিল যে দিনের বেলায় শিয়াল ডাকতো ’ । ঝিমলির বিশ্বাস হয় নি, ‘ যাঃ এমনটা হয় নাকি? ’ দাদু সত্যির উপর জোর খাটিয়ে বলেছিল, ‘ সত্যি – সত্যি – সত্যি ’ । দাদু আরও বলেছিল, ‘ চন্দ্রবোড়া, কেউটে কতরকম সাপ ছিল। এখন যেখানে তোদের সুইমিং পুল হয়েছে ওটা তো ছিল নেকড়েটার বাসা। ডালে ডালে হনুমান, হুফ হুফ করে বেড়াতো। গাছের কোটরে কোটরে কাঠবিড়ালি থাকতো। সে এক সাংঘাতিক ব্যাপার ’ । ঝিমলি জানলা দিয়ে একবার বাইরে তাকায়। কোথায় জঙ্গল, গাছ, চারিদিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে তাদের উত্তরা আবাসন। ঝিমলি ঠোঁট উল্টে দিয়ে বলে, ‘ ধ্যাৎ তুমি বানিয়ে বানিয়ে বলছ। তুমি নিজে চোখে দেখেছো? ’ দাদু এবার একটু ঘাড় নেড়ে বলে, ‘ না, আমি সবটা দেখি নি। তবে আমার দাদু দেখেছে এবং শুনেছে এই জায়গায় শিয়াল ডাকছে ’ । দাদুর কথাটা ঝিমলি পুরোটা বিশ্বাসও করে নি। আবার উড়িয়ে দিতেও পারে নি। তাই রাত্রে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তাদের খাঁচায় রাখা টিয়াটার দিকে তাকিয়ে ভাবছিল – ইস্ত্রিওয়ালা দর্জি কি বলতে পারবে একথা সত্যি কিনা। দর্জি ভু...

গল্প - বেগম জাহান আরা

Image
তুষ্ট বাবুর ছাদ বাগান   মা বাবাকে বলে কয়ে ছাদের একটা কোনায় বাগান করেছে তুষ্ট। প্রথম এক বছর শুধু ফুলের গাছই ছিলো। কতোই আর জায়গা! দুই মিটার বাই তিন মিটার। বারোটা টবে চন্দ্রমল্লিকা , গাঁদা , কিছু মৌশুমী ফুলের গাছ লাগালো। চমতকার ফুল ফুটেছিলো। তার ছাদ বাগান দেখে সবাই খুশি। উতসাহের চোটে  দ্বিতীয় বছরে টবের সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাবছে সে। মামা ফরহাদ বেড়াতে এসে বললো , তোর তো অনেক জায়গা মামা। একটা আম গাছ লাগা , এক্কেবারে কোনায়। - সে তো অনেক বড়ো গাছ মামা। ছাদ ভেঙে পড়বে না ? - কি বলে পাগল ? কলমের গাছ লাগাবি। সে গাছ বেশি বড়ো হয় না। - না মামা , শেষে আমার বাগানের সখটাই বাতিল করে দেবেন বাবা। - কি যে বলিস! আজই একটা কাটা ড্রাম কিনে আনবো। - অতোটুকু ড্রামে আম গাছ হবে না গো মামা। - আমি তো করেছি দশটা গাছ। ছাদে না , পেছনের ছোটো বাগানে। সবগুলোই কাটা ড্রামে। এইবছর মুকুলও এসেছে।

গল্প - পৃথিকা ইসলাম বৈশালী

Image
যাদের   কাছে   ঋণী বৃষ্টি একটা গাছের আড়াল থেকে দেখছে , বড় গাড়িটা এসে মাস্টার বাড়ির সামনে থামলো । কয়েকদিন আগে থেকেই শোনা যাচ্ছে , মাস্টার বাড়ির ছেলে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসবে । যদিও যুদ্ধের সময় ওরা এখানেই ছিলো । তারপর আবার ঢাকা চলে গিয়েছে । যুদ্ধের সময় বৃষ্টি বাড়ি থেকে বের হতো তবে মাস্টার বাড়ির যে নাতনি তার সাথে দেখা হয়নি । ওরা বোধহয় বেশি সাবধান তাই কাউকে ঘর থেকে বের হতে দিতো না । এখন যুদ্ধ শেষ ওরা মনে হয় বের হবে । গাড়িটাকে ঘিরে একটা বড় ভিড় । সবাই গাড়ি দেখবে । ছোট ছোট বাচ্চারা গাড়িটা ছোঁয়ার চেষ্টা করতে থাকে । একজন একটু ছুঁয়ে এসে বন্ধুদেরকে গর্ব নিয়ে গাড়ি ছোঁয়ার কাহিনী বলতে থাকে । বৃষ্টি জানে মাস্টার বাড়ির নাতনি তার সমান বয়সীই । তার সমান একটা মেয়ে গাড়িতে করে আসছে তার সামনে বৃষ্টির কেন জানি যেতে ইচ্ছে করলো না । তাই বৃষ্টি একটা গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে দেখছে । রিয়া গাড়ি থেকে নেমে একটু থতমত খেয়ে গেলো । এতো মানুষ কি শুধু তাদেরকে দেখতে এসেছে ? রিয়া একটু অবাক হয়ে সবাই কে দেখে । কিছু কিছু মহিলা গাছের আড়াল থেকে দেখছে । ছোট ছেলে মেয়েরা গাড়ি ছোঁয়ার চেষ্টা করছে । রিয়া বুঝ...

গল্প - হৃষিতা সেনগুপ্তা

Image
অন্তু-শিফার বিজয় দিবস   অন্তু আর শিফা ভাই বোন। তাদের মাঝে বয়সের পার্থক্য   না থাকায় তাদের পিঠাপিঠি ভাইবোন বললেও চলে।  ভাইবোন হলে কি হবে তারা একে অন্যের শত্রু। সবকিছু নিয়ে তাদের ঝগড়া হয়।কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না।  ঝগড়ার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে এক তুমুলযুদ্ধ বেঁধে যায় আর সেই ভয়ানক তুমুলকান্ড তাদের বাবা-মাকে সামলাতে হয়।  পোশাক , খেলনা , খাবার , এমনকি বাবা-মাকে নিয়ে ও তাদের ঝগড়া হয়। একজন বলে মা-বাবা আমাকে বেশি আদর করে আরেকজন বলে মা-বাবা আমাকে বেশি আদর করে। এভাবে তাদের মধ্যে প্রতিদিন ঝগড়া হয়।ঝগড়া হলে ও তারা একে অন্যকে ছাড়া চলতে পারে না। একজনকে বকা দিলে আরেকজন কাঁদে। একজনকে মারলে , আরেকজন ব্যথা পায়। তাদের মধ্যে আবার একটি মিল আছে সেটি হলো তারা তাদের দাদাকে খুব ভালোবাসে ও দাদার থেকে গল্প শুনতে চায়।

কবিতা - মারজানা সাবিহা শুচি

ষোলোই ডিসেম্বর   ছোট্টসোনা আজকে শোনো খুব প্রিয় সে কাহিনী, বিজয়-সূর্য আনলো জিতে বীর মুক্তি-বাহিনী। কাহিনীটা একাত্তরের ডিসেম্বরের ষোলো, তবে তোমায় জানতে হবে তার আগে কী হলো।

কবিতা - আহসানুল হক

অসীম সাহস  সেদিন  ওরা যুদ্ধে গেল স্বপ্ন নিয়ে বুকে  ওড়াবে যে বিজয় নিশান স্বাধীন দেশে সুখে  বুকের ভেতর তেজ ছিল খুব  কে ওদেরকে রুখে  ?  বিজয় পেলাম, পতাকাও পেলাম স্বদেশ ভূমি  যাদের ত্যাগে পেলাম এসব শ্রদ্ধায় তাদের চুমি!  যায়নি তো বাদ কিশোর -যুবা এই যে যেমন 'রুমী' অযুত বোনের আব্রু গেছে  যায়নি তো বাদ সুমি!

ধারাবাহিক গল্প- সোফি পারোভি রেইন

Image
দু ’ টি বিড়ালের অভিযান- ২ সিল্কি খালার ভাবসাব দেখে বুঝে গেল এটা খালার কাজ। সে অনেক ভেবে চিন্তে বাসা থেকে বের হওয়ার প্ল্যান করলো। খালা যখন ময়লা ফেলতে বাইরে যায় তখন সেও আস্তে করে চলে যাবে। কিন্তু লিলি সবসময় তার কাছে থাকে। মিল্কিকে দেখতে না পেয়ে লিলিও খুব চিন্তিত। সেও সব জায়গায় খুঁজেছে কিন্তু মিল্কিকে খুঁজে পায়নি আর সেজন্য সিল্কিকে সবসময় কাছে কাছে রাখে। তাই সিল্কি ভাবল তাকে এমন করে বের হতে হবে যেন লিলি দেখতে না পায়। যেদিন লিলির ক্লাস থাকবে সেদিন তাকে বের হতে হবে।

গল্প - তাবাসসুম নাজ

Image
  কংকা ও বুবুন --- বাবা । --- হু । --- বাবা ! --- বল , মা । শুনছি । ভাত খেতে খেতে বাবা বলল । --- মেলা দেখতে যাব , বাবা । বাসার আশেপাশে কোথায় যেন মেলা বসেছে । গতরাত থেকে গান আর হৈচৈ এর শব্দ ভেসে আসছে । --- মেলা ? তুমি মেলায় যেতে চাও ? আগে তো কখনো চাও নি । হাসতে হাসতে বাবা বলল । --- এখন চাই , বাবা । আমাদের ক্লাসের মৌলী মেলায় গেল , কত মজা করল , কত কী খেল , কত কী কিনল । আমিও মেলায় যাব , বাবা ।