গল্প - হৃষিতা সেনগুপ্তা
অন্তু-শিফার বিজয় দিবস
অন্তু আর শিফা ভাই
বোন। তাদের মাঝে বয়সের পার্থক্য না থাকায় তাদের পিঠাপিঠি ভাইবোন বললেও চলে।
ভাইবোন হলে কি হবে তারা একে
অন্যের শত্রু। সবকিছু নিয়ে তাদের ঝগড়া হয়।কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না।
ঝগড়ার এক
পর্যায়ে তাদের মধ্যে এক তুমুলযুদ্ধ বেঁধে যায় আর সেই ভয়ানক তুমুলকান্ড তাদের
বাবা-মাকে সামলাতে হয়। পোশাক,খেলনা,খাবার,এমনকি বাবা-মাকে নিয়ে ও তাদের ঝগড়া
হয়।
একজন বলে মা-বাবা আমাকে বেশি আদর করে আরেকজন বলে মা-বাবা আমাকে বেশি আদর করে।
এভাবে তাদের মধ্যে প্রতিদিন ঝগড়া হয়।ঝগড়া হলে ও তারা একে অন্যকে ছাড়া চলতে পারে
না। একজনকে বকা দিলে আরেকজন কাঁদে। একজনকে মারলে,আরেকজন
ব্যথা পায়।
যদি ও দাদা এখন খুব অসুস্থ তা ও তিনি তার নাতি
নাতনিকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাতে আনন্দ উপভোগ করেন।তাদের দাদা ১৯৭১ সালের একজন
মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি ২ নং সেক্টরের অধীনে ছিলেন।
যুদ্ধের সময় তিনি তার দলের
এক সহযোগীকে বাচাঁতে গিয়ে ডান পা হারান।তখন থেকেই
তিনি পঙ্গু। যুদ্ধের কথাগুলো আজ ও মনে পড়লে তার চোখ দিয়ে পানি পড়ে। নিজেকে সামলে
নিয়ে তিনি তাদের গল্প শোনান।তার সহযোদ্ধাদের অনেকেই মারা গেছে, অনেকেই অসুস্থ, কেউ কেউ অনাহারে বেঁচে আছে।এই
গল্প তার নাতি নাতনীকে বললে তারা ও অনেক সময় কেঁদে উঠে।
যুদ্ধের গল্প শুনতে শুনতে
তাদের দিন চলে যায়।আর ডিসেম্বর মাস চলে আসে।আর দুই দিন পর বিজয় দিবস। তারা দাদার
কাছ থেকে গল্প শুনে বিজয় দিবসের ছবি আকঁতে থাকে।বিজয় দিবসে তারা তাদের দাদাকে সেই
ছবি উপহার দিবে।
ছবি আঁকা শেষ হলে তারা ঘুমাতে যায়। ঘুমের মধ্যে শিফা স্বপ্ন দেখে
তাদের দাদা তাদের থেকে দূরে চলে যাচ্ছে আর তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে
যেতে বলছে।শিফা এই স্বপ্ন দেখে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে সে দাদার কথা মনে রেখে দেশের
জন্য কাজ করবে। এই সব ভেবে ভেবে সে একসময় ঘুমিয়ে পড়ে।
Comments
Post a Comment