Posts

Showing posts from October, 2022

পাতকুয়া : কীর্তিনাশা নজরুল

Image
  ঝিম ধরা গ্রাম্য দুপুরে নির্জন এক বাগানে রাসেল একা একা লাকড়ি কুড়াচ্ছে। কাছেই লতা-গুল্মে ভরা এক জায়গায় অতি প্রাচীন এক পরিত্যাক্ত পাতকুয়া। বহুকাল হয়ে গেছে এ কুয়া কেউ ব্যবহার করে না। গ্রামে এখন বাড়িতে বাড়িতে টিউবওয়েল বসে গেছে। তাই পাতকুয়ার খবর এখন আর কে রাখে ?রাসেল গুনগুন করে গান গাচ্ছে আর লাকড়ি জমাচ্ছে। এমন সময় সেই প্রাচীন পাতকুয়ার ভেতর থেকে কেমন খল-খল, ছড়-ছড়, ঘড়-ঘড় আওয়াজ উঠলো। রাসেল কান খাড়া করে শুনে বোঝার চেষ্টা করলো আওয়াজটা কিসের। কিন্তু কিছু বুঝতে পারলো না। ওদিকে আওয়াজটা আরো জোরালো হচ্ছে। রাসেল এবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো। আর তাকিয়েই ভয়ে জমে গেল। কুয়ার মুখে একটা বুড়ো মানুষের মুখ দেখা যাচ্ছে। মাথায় তার খানিকটা লম্বা সাদা ভেজা চুল। দু’হাত দিয়ে সে কুয়ার দেয়াল ধরে ঝুলে আছে। মুখে তার কেমন যেন হাসি লেগে আছে। বুড়ো লোকটা গলা খাকাড়ি দিয়ে বলে – ও মিয়া ভয় পাইলা নাকি ? ভয় পাইয়ো না। আমি দূর দেশে থাকি। এদিকে ঘুরতে আইসা ভুল কইরা কুয়ার মইধ্যে পইড়া গেছি। কাছে আইসা আমারে ধইরা একটু উঠাও দেখি ! রাসেল ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করে – আপনের চুল এমন সাদা আর লম্বা কেন ? বুড়ো বলে – ওরে ভাই, আমার বয়স হইছে তাই চুল সাদা ...

নিলয় নন্দী: থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে

Image
থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে পুকুরের ধারে দাঁড়িয়ে পুলু একের পর এক ঢিল ছুড়তে থাকে পানিতে। কেন ছোড়ে সে নিজেও জানে না। একটা চ্যাপটা ঢিল পেলে না হয় ব্যাঙ-লাফ খেলা যেত। কিন্তু তেমন কোন ঢিল সে হাতের কাছে খুঁজে পায় নি । কেন যেন ভীষণ কান্না পাচ্ছে তার। ইচ্ছে করছে সোয়েটারের লম্বা হাতাসহ হাতটা পানিতে ডুবিয়ে দেয়। খুব ঠাণ্ডা লাগুক তার, জ্বর হোক, মরে যাক। তাহলে মা’র ভালো একটা শিক্ষা হবে। মায়েরা সব এমন হয় কেন?কী হয়েছে খোকা? কাঁদছ নাকি? পুলু ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকায়। সেই অদ্ভুত লোকটা তার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে। একটু ভয় ভয় লাগে তার। এক দৌড়ে কি বাসায় ফিরে যাবে সে? লোকটা গায়ের চাদর ভালো করে পেঁচিয়ে নিয়ে আবার হাসে, মন খারাপ? আমি কিন্তু মন ভালো করার ওষুধ জানি। কী ওষুধ? বাহ! এই তো কথা ফুটেছে মুখে। লোকটা পাশ থেকে একটা ঢিল কুড়িয়ে নেয়। ব্যাঙ-লাফ খেলছিলে তো? আমি এই খেলা শিখেছিলাম আমার এক চাচার কাছ থেকে। উনি এক ঢিলে দশবার পর্যন্ত জাম্প দিতে পারতেন। হাতের ইটের টুকরোটা ছুড়ে মারতেই সেটা পুকুরের পানি ছুঁয়ে ছুঁয়ে সামনে ছুটে চলে। পুলু গুনে দেখল মোট ছয়বার লাফ খেয়ে তবেই ঢিলটা পানিতে ডুবল। এসো, এই ঘাটের পাশে বসি। দেখবে মন ভালো হয়...

ময়ূরী মিত্রের গল্প

Image
কাঁদে না দজ্জাল   সে বার বহুদিন অনুপস্থিতির পর জলদি জলদিই মায়ের হাত ধরে স্কুল চলে এল দজ্জাল | গেটে ঢোকার মুখে দেখি ---স্কুলের পাঁচিলে বসে মায়ের ফোন নিয়ে কার কাছে যেন তার স্কুলকর্মের ধারাবিবরনী দিচ্ছে | তার মা বললেন ---ফোনে তার পিসি | স্কুলে এসে পিসিকে ফোন করা চাইই তার | আমি ঢুকতেই ফোনের ওপারে পিসিকে বলল ----" ওই ময়ূরী এল | আজ পড়াশুনো গেল আমাদের |" বুঝুন ----

মাহবুব আজাদের ছড়া

Image
হোঁদড় যাবে বিলেতে   র টলো খবর, নয় কেনিয়া, উগাণ্ডা বা চিলেতে শিখতে হাসি সোঁদরবনের হোঁদড় যাবে বিলেতে। বিমান-সরাই-প্রশিক্ষণের খরচ কোটির ওপরে লক্ষদশেক খসবে আরও খাবার-কাপড়চোপড়ে। খর্চা আরও বিলেতি রং-ঢঙ্গে তাকে সাজাবার... বনজনতার পকেট থেকেই পয়সা যাবে যা যাবার। পক্ষী-পশু বেজায় নাখোশ এ নিয়ে মাসখানেকই হাসতে শেখার জন্যে আবার বিলেত যাবার মানে কী? ট্রেনিং ছাড়াই সমস্ত দিন গা-জ্বালানো শব্দে সে চলছে হেসে, যেমন হাসে বনের হোঁদড় সব দেশে। বাঁদর যখন বক্তিমা দেয়, ঠুমরি সাধে মহিষে শিক্ষাবিনাই তখন হাসে হিহিহোহোহোহি সে। ফেসবুকেও ভারিক্কি সব প্রবন্ধ আর থিসিসে যায় দাগিয়ে একটা করে 'হাহা' দিবানিশি সে। আর তাছাড়া উচ্চশিক্ষা হয় নিতে তো এ নিয়া শিখতে যাবি তানজ়ানিয়া, উগাণ্ডা, বা কেনিয়া। আফ্রিকাতে খান্দানি সব হোঁদড় হাসে দল বেঁধে হাসির ওপর শিক্ষা তারা দেবার যা তা অল্পে দেয়।    বল-খেলাটা শিখতে গেলে কেউ কি যাবে হাভানা? কম খরচে শেখায় যদি ব্রাজ়িল-কোপাকাবানা? পাহাড়চড়া শিখতে কি কেউ বিলেত যাবে এ কালে? শিক্ষা যখন সস্তা মেলে হাতের কাছে নেপালে? "কোটির ওপর খর্চা করে বিলেত যাবি ক্যানো রে?" পক্ষীপশু ব্যস্ত থাকে এসব...