সোফি পারোভি রেইনের ধারাবাহিক গল্প


দুটি বিড়ালের অভিযান-৩






মিল্কি আর কিছু করতে না পেরে পুকুর পাড়ে বসে পড়ে। সে চারদিক তাকাতে লাগলো। পানি দেখে তার ভয় লাগছিল। হঠাত সে পুকুরে আরেকটা বিড়াল দেখতে পেলো। ধবধবে শাদা। আসলে সেটা ছিল মিল্কির প্রতিবিম্ব। মিল্কি তাঁকে দেখে জিজ্ঞেস করে,

“এই তুমি কে? তোমার নাম কী?”

বিড়ালটি কোন উত্তর দিল না

“এই তুমি কথা বলছ না কেন?” মিল্কি আবার জিজ্ঞেস করলো।

এইবার মিল্কি বোকার মত তাকে ধরতে গেলো আর পড়ে গেলো পুকুরের পানিতে। সে অনেক চেষ্টা করলো সাঁতার কাটতে কিন্তু ডুবে গেলো গভীর পানিতে। ছটফট করতে করতে সে জ্ঞান হারাল। কিন্তু জ্ঞান হারানোর আগে সে বুঝতে পারলো কে যেন তাকে কামড়ে ধরেছে।

সেই পুকুরে থাকতো এক বোয়াল মাছ। সে অনেকক্ষণ ধরে বিড়ালটাকে লক্ষ্য করছিল। বিড়ালটার পড়ে যাওয়া সে দেখেছে। সে বিড়ালটাকে অনেক কষ্ট করে পানি থেকে তুলে পুকুরের পাড়ে এনে রাখল। বোয়াল মাছটি পানি থেকে বিড়ালটিকে দেখতে লাগলো। সে অপেক্ষা করতে লাগলো বিড়ালটির জ্ঞান ফেরার জন্য।

এদিকে লিলি খুঁজে পাচ্ছে না সিল্কি আর মিল্কিকে (আসলে যে জিনজার)। সে কেঁদে কেটে একাকার করে রেখেছে পুরো বাসা। বাসার সবাই তাদের কমতি অনুভব করছিল। দুষ্টু খালাও মন খারাপ করে কাজ করে। খালা ভাবছিল, বাসার সবার আজ মন খারাপ তার জন্য। তাই তার আর কাজে মন বসছিল না। খালা তাই বের হল সিল্কি আর মিল্কিকে খুঁজতে। ওদিকে লিলিও বের হল তাদের খুঁজতে।

সিল্কি, জিনজার আর টমি তন্ন তন্ন করে খুঁজছে মিল্কিকে।

সিল্কি মন খারাপ করে বলল, “আমার বোনকে কী আর খুঁজে পাবো না?!”

“ দাড়াও দাড়াও! আমি ওর গন্ধ পেতে শুরু করেছি। এসো আমার পেছন পেছন,“ উত্তেজিত ভাবে টমি বলল।

জিনজার বলল,” হুররে, মিল্কি আমরা আসছি।“

এদিকে পুকুর পাড়ে মিল্কির জ্ঞান ফিরে এলো।

বোয়াল মাছ বলল, “ হ্যালো! তোমার নাম কী বন্ধু? তুমি এই গভীর পুকুরে কীভাবে পড়লে?”

মিল্কি বোয়াল মাছকে সব খুলে বললো। মিল্কি বোয়াল মাছকে বললো,

“ তোমার নামটা কী ভাই?”

“ আমার নাম বোয়াল। তবে সবাই আদর করে বিলু ডাকে।”

“আচ্ছা। বিলু ভাই, আমার বাসা হলো নীল-বাজার, আমার মালিককে বলতে শুনেছি। তুমি কী নীল-বাজার চেনো?”

বিলু বললো,” এইখান দিয়ে কয়েকটা জেলে যায় তাদের মুখে নীল-বাজারের নাম শুনেছি। মনে হয় এখান থেকে বেশি দূরে না। ওই দেখো কয়েকটা জেলে। তারাও এখন নীল-বাজার যাবে। তুমি তাদের ঝুড়িতে ঢুকে চলে যাও। অসুবিধা হবে না। তবে খুব সাবধানে, লুকিয়ে ঢুকিও নইলে তোমাকে মেরে তাড়িয়ে দেবে।“

“চিন্তা করো না। আমি ঝুড়ির ভেতরে লুকিয়ে যাবো। আচ্ছা বিলু ভাই আমি চলি। মাঝে মাঝে বাসা থেকে পালিয়ে তোমাকে দেখতে আসবো।“

“এসো কিন্তু, ভুলে যেও না,” বলে বিলু মিল্কিকে বিদায় জানাল।

মিল্কি বিলু ভাইকে তার জীবন বাঁচানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে গিয়ে ঢুকল ঝুড়ির ভেতর। ভেতরে ছিল অনেক গুলো ছোট মাছ। মিল্কি বেশ কয়েকটা মাছ খেয়ে চুপচাপ বসে থাকলো। জেলে এসে ঝুড়ি নিয়ে নীল-বাজার রওনা হল।


(চলবে)

Comments

Popular posts from this blog

ভিনদেশী রূপকথা

আতনিন বিন জহির

বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা