ধারাবাহিক গল্প

দুটি বিড়ালের অভিযান-১

সোফি পারোভি রেইন





সিল্কি আর মিল্কি দুই ভাইবোন। ছোটবেলায় মায়ের কাছ থেকে তাদের আলাদা করে নিয়ে আসা হয়। বাসার ছোট মেয়ে লিলি বিড়াল খুব পছন্দ করে। তার জন্য সিল্কি আর মিল্কিকে বাসায় আনা হয়।

সিল্কির গায়ের পশম ঝলমলে তাই লিলি তার নাম রাখল সিল্কি আর মিল্কির গায়ের পশম দুধের মত শাদা তাই তার নাম রাখল মিল্কি। সিল্কি আর মিল্কি তাদের নতুন মালিককে পছন্দ করলো না। অথচ লিলি ওদের অনেক আদর করে। কিন্তু সিল্কি আর মিল্কি মনে করে মানুষ মানেই বিপদ। তাছাড়া তাদেরকে মা’র কাছ থেকে আলাদা করা হয়েছিল বলেও তাদের মন খারাপ থাকতো। তাই কিছুদিন পরেই তাদের মাকে আনা হল কিন্তু মা’টা কোন দিক দিয়ে পালিয়ে গেলো। আবারও সিল্কি, মিল্কি একা হয়ে গেল।

লিলিদের বাসায় কাজের জন্য একজন খালা থাকতেন। তিনি বিড়াল আসায় মোটেও খুশি না। বিড়ালগুলো আসায় উনার কাজ বেড়ে যাওয়ায় উনি বিরক্ত ছিলেন, মনে মনে ভাবতেন,

'এই বিড়াল গুলোকে এই বাসা থেকে তাড়াতেই হবে।'

এদিকে সিল্কি আর মিল্কিও খুব সাবধানে থাকে। তারাও এই বাসার কাউকে পছন্দ করে না। সিল্কি মিল্কিকে বলে, 'আমাদের সবসময় সাবধানে থাকতে হবে। না হলে কোন সময় কে আমাদের আদর করে নিয়ে কোথাও ফেলে দিয়ে আসবে তা বলা যায় না।'

'ঠিক-ই বলেছ,' মিল্কিও সায় দেয়।

এদিকে লিলি খুব চিন্তায় আছে, বিড়াল গুলো কেন তাঁকে পছন্দ করে না। একমাস হয়ে গেল এখনো পোষ মানে না কেন!

পরের দিন লিলি কোচিং যাবে। সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। এই বছর জেএসসি দিবে তাই বেশি করে পড়তে হয় তাঁকে। সে তার মা’কে বলল, 'মা আমার কোচিংএ এর দেরী হয়ে যাচ্ছে, আমি যাচ্ছি। সিল্কি আর মিল্কিকে একটু খাবার দিয়ে দিও।'

মা লিলিকে বলল, 'তুমি খাবারটা দিয়ে যাও। আমার বিড়াল ভয় লাগে, আমি তাই তোমার রুমেই যাই না!'

'অনেক দেরী হয়ে গেছে মা তুমি খালাকে বোলো একটু খাবারটা দিয়ে দিতে', লিলি মাকে অনুরোধ করল।

লিলি বিদায় জানিয়ে চলে গেল। মা খালাকে এক বাটি কুসুম গরম দুধ বিড়াল ছানা দু’টোকে দিতে বললেন। খালা বুঝে গেলেন, ভাবলেন- এইতো সুযোগ বিড়াল দু’টোকে ছাড়াবার।

খালা দুধে ঘুমের ওষুধ দিয়ে নিয়ে এলেন, ছানা দু’টোকে ডাকলেন,-'আয় আয়, দুধটা খেয়ে নে!'

মিল্কি একটু বোকা তাই সে দুধটা খেয়ে নিলো। কিন্তু সিল্কি তখন সোফার নিচে ঘুমাচ্ছে। মিল্কি পুরো দুধটা খেয়ে নিলো। দুধ খাওয়ার ৫/১০ মিনিটের মধ্যে সে ঘুমিয়ে পড়লো। খালা সুযোগ বুঝে মিল্কিকে বাসা থেকে অনেক দূরে রেখে এলেন। 

সিল্কি ঘুম থেকে উঠে মিল্কিকে খুঁজল সারা বাড়ি। কিন্তু কোথাও না পেয়ে তার সন্দেহ হল। দুষ্টু মানুষ গুলো তার বোনকে ফেলে দিয়েছে।

এখন সিল্কি কি করবে? মিল্কি কীভাবে বাড়ি ফিরবে? তাঁকে এখন নামতে হবে অভিযানে।


[চলবে]

................................................

 [সোফি পারোভি রেইন, সপ্তম শ্রেণী, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]

     

Comments

  1. মিল্কির জন্য চিন্তায় পড়ে গেলাম। কী যে হলো বেচারীর...

    ReplyDelete
  2. দারুণ লিখেছ!

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

ভিনদেশী রূপকথা

আতনিন বিন জহির

বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা