Posts

মারজানা সাবিহা শুচির গল্প

Image
পতাকার পিছনের কান্নাগুলো “বাবুই বাবুই তাড়াতাড়ি আয়, দাদু খাচ্ছেন! বাবুই তার পুতুলগুলো সাজাচ্ছিলো, পাপাইয়ের চাপা গলার ডাক শুনে সব ফেলে ছুট লাগলো। দুই ভাইবোন একদৌড়ে ডাইনিং টেবিলে গিয়ে ভাল মানুষের মতো মুখ করে বসলো, একটা চেয়ারেই দুইজন গাদাগাদি করে। একসাথে বসলে নিজেদের মধ্যে গুঁতোগুঁতি আর হাসাহাসি করতে সুবিধা হয় যে! বসির দাদু খাচ্ছেন। বাবুই পাপাইকে মা আগেই খাইয়ে দেন। অন্যদিন হলে ওরা এতোক্ষণে বিছানায় উঠে বালিশ নিয়ে মারামারিটা শুরু করে দিতো। আজ দাদুর খাওয়া দেখবে বলে অপেক্ষায় ছিলো। শুধু কি আজ, ওরা দুইদিন ধরে প্রতি বেলায়ই দাদুর খেতে বসার অপেক্ষায় থাকছে। দুদিন আগে ওদের বাবার এই মামাটি বেড়াতে এসেছেন, আর যেই না উনি খেতে বসলেন ওরা তো অবাক! এমনিতে কত শান্ত-শিষ্ট, খেতে বসলেই কেমন যে হয়ে যান! এক হাতে থালাটা আগলে রাখেন আর এক হাতে গাপুস গুপুস করে খেতে থাকেন। যেন খুব তাড়া আছে, এক্ষুনি খেয়ে শেষ না করলে যেন আর খাওয়াই হবেনা। আর চারপাশে কেমন ভয়-ভয় রাগ-রাগ চোখে তাকাতে থাকেন! দাদু অত বুড়ো নন কিন্তু খাওয়ার সময় মুখটা কেমন বুড়োটেও লাগে।

পারভীন সুলতানার তিনটি কবিতা

হিম হিম শীত শীতের মলিন আকাশ রঙটা ধুসর বা কাশ মেঘে থাকে মেখে   হুহু হিমেল বাতাস ঠাণ্ডা কী যে মাতাস শীত বুড়িকে হেঁকে।

মৌলি আখন্দের গল্প

Image
ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক আজ লামিয়ার জন্মদিন। ওর বয়স আজকে ছয় বছর পূর্ণ হলো।  সকাল থেকে আজকে বাসায় সাজ সাজ রব। আম্মু ভোরে উঠে রান্নাবান্না করছে। আব্বু বেলুন, মোমবাতি কিনে এনেছে। বাসা সাজানো হচ্ছে রঙ বেরঙের বেলুনে আর রঙিন কাগজ দিয়ে। আম্মু কেক বানাচ্ছে বেবি শার্ক থিম দিয়ে। লামিয়ার নতুন জামা বের করে রেখে দিয়েছে বিছানার ওপর। গোসল করে নতুন জামা পরবে লামিয়া। একটু পর গিয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছে জামাটা। 

শংকর দেবনাথের কবিতা

Image
পড়বো ছড়ার বই পড়তে পারি অ আ ক খ পড়তে পারি ছড়াও, মিথ্যে তবু আমায় কেন বদনামেতে জড়াও? লিখতে কি আর সবাই পারে? একটু ভাবো মাগো, বৃষ্টিও তো পড়তে পারে লিখতে পারে না গো। চোখের জলও শুধুই পড়ে কিচ্ছু লেখে না সে, গাছের পাতা হাওয়ায় পড়ে শিশির পড়ে ঘাসে। শীত পড়ে আর গরম পড়ে ইচ্ছে খুশি মত, লিখতে ভালো পারিনে তাই আমারই দোষ যত। ঘুমিয়ে পড়ে, জেগেও পড়ে, পড়ে খাটের থেকে, অ আ ক খ সত্যি বলো, ওরা কি কেউ লেখে? ইচ্ছে মত যাচ্ছে পড়ে, লিখছে সবাই কই! লিখবো না মা, আমি কেবল পড়বো ছড়ার বই।

নাফিসা নাহিয়ানের গল্প

Image
মিস্টার অ্যালজেব্রা রাত ১২টা বেজে ১মিনিট পার হয়েছে। একটা পেঁচা ডাকতেই মিস্টার অ্যালজেব্রা বিছানা থেকে উঠে পড়লেন। রোজকার মতো ধুলো পড়া জানালাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পরিষ্কারটায় নিজের চেহারা দেখে চুলগুলো এলোমেলো করে নিলেন। কিন্তু আজ কোন সাধারণ দিন নয়। আজ অনেক অনেক দিন পর কেউ এসেছে এই বাড়িতে থাকার জন্য। তাই তিনি মনের আনন্দে একটা গানের সুর গাইতে গাইতে নিজের অন্ধকার ধুলো পড়া ঘর থেকে বের হলেন। যারা এ বাড়িতে থাকতে এসেছে তাদের নাকি ছোট ছোট দুটি বাচ্চাও আছে। এই ভেবে মিস্টার অ্যালজেব্রা আরো খুশি হলেন। আমরা এখানে যে মিস্টার জেব্রার কথা বলছি, মানে মিস্টার অ্যালজেব্রা (মিস্টার জেব্রা বললে তিনি আবার রেগে যান) আদতে তিনি মোটাসোটা উঁচু লম্বা ধরনের একটি ভূত। এটুকু লিখতে এই মিস্টার অ্যালজেব্রা আমার কানের কাছে এসে হুংকার দিয়ে উঠলেন, "অ্যা!! ভূত বলে কি আমাদের কোনো সম্মান নেই? আমরা তো কোনো জড় বস্তু কিংবা জীবজন্তু নই যে আমাদের "একটি ভূত" বলতে হবে। 'একজন ভূত' লেখ। আমি বেশ থতমত খেয়ে গেলাম আবার ঠিক করে লিখতে শুরু করলাম আর মিস্টার অ্যালজেব্রা বলতে লাগলেন। বাচ্চাদের ভয় দেখানো বেশ সহজ।...