সোফি পারোভি রেইনের গল্প

বন্দী সাতদিন
 
প্রথম খন্ড




অনলাইন ক্লাসে ঢুকে ইউনা বুঝলো আজকে আর ক্লাস হবে না। গ্রীষ্মের ছুটি। ইউনা তাড়াতাড়ি মিকাসা ও জিমি কে কল করে গুহার কাছে আসতে বলল। গুহাটা তারা খুঁজে পেয়েছিল কিছুদিন আগে। সেদিন থেকে গুহাটা হয়ে যায় একদম তাদের। সেখানেই তাদের সময় কাটে। এই গোপন জায়গার কথা তারা তিনজন ছাড়া আর কেউ জানে না। গুহাটা তাদের বাসার থেকে দূরে, জঙ্গলের ভেতরে। গুহার পাশ দিয়ে গেছে ছোট একটা নদী,নদীর দুই পাশে অসংখ্য নুড়ি পাথর।
এখন করোনার সময়। সবাই কোয়ারেন্টাইনে। কিন্তু তারা নয়। ইউনার রুম দোতলায়। তার জানালায় কোন গ্রিল নেই। জানালাটায় প্লাস্টিক স্লাইড দেওয়া। ইউনা তার জানালা দিয়ে একটা রশি নিচে ফেললো। তা শক্ত করে একটা ভারি টেবিলের সাথে বাঁধল। তার রুমের দরজা লক করে সে জানালা দিয়ে রশি বেয়ে নেমে গেলো তাদের ঘরের উল্টো দিকে।

মিকাসা হলো ইউনার বেস্ট ফ্রেন্ড। তারা ছোটবেলা থেকে একই স্কুল পড়ে। কেউ তাদের বন্ধুত্ব ভাঙতে পারে না। মিকাসাকে সবাই ছোট করে ডাকে মিকা। মিকাও বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে গেল গুহায়।

জিমি আর ইউনার দেখা হয় প্রায় এক বছর আগে। তারা প্রতিবেশী। জিমি আর মিকা হল চাচাত ভাই বোন। সে সাইকেলে চড়ে পৌঁছে গেল গুহায়।

জিমি- ইউনা এখনো আসছে না কেন?

মিকা- জানি না। ওর রুমতো দোতলায় তাই আসতে হয়তো একটু সময় লাগছে।

জিমি- আমার ছয়টার আগে বাসায় যেতে হবে, এসাইনমেন্ট করতে হবে।

মিকা- হ্যাঁ, আমারও করতে হবে। ইউনাটা এতো দেরী করছে যে কেন!

মিকা আর জিমি কথা বলছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তর্ক করছে। দেখতে দেখতে পাঁচটা বেজে গেল। ইউনার কোন খবর নাই। মিকাসা ইউনাকে ফোন কএছে কিন্তু ইউনা ফোন ধরছে না।

মিকা- ব্যাপারটা কী! সে কি আজকে আসবে না?

জিমি- ইউনাতো কখনো এমন করে না।

মিকা- চলো একটু ঘুরে দেখি আশেপাশে আছে কি না।
জিমি- হ্যাঁ, চলো। দেখা যাক। অন্ধকার হয়ে যাবে একটু পরেই।

গুহার পাশেই একটা ছোট্ট নদী। নদীর দু’পাশেই ছোট ছোট পাথর দিয়ে ভরা। একটু সামনে গেলেই একটা ছোট পাহাড়। জিমি আর মিকাসা নদীর পাশের বড় একটা পাথরে দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকিয়ে খুঁজছে ইউনাকে।

জিমি- চলো বাসায় ফিরে যাই। সে মনে হয় আসেনি।

মিকাসা- হ্যাঁ, চলো যাই।

এমন সময় জিমির মাথা ঘুরতে থাকে। সে মাথার পেছনে হাত দিয়ে দেখে রক্ত। মাথা পেছনে ঘুরাতেই সে দেখে মিকাসা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে আছে। মিকাসার পাশে দু’জন লোক। এরপর সে মাটিতে পড়ে যায় এবং সব অন্ধকার হয়ে যায়।


(চলবে...)

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

ভিনদেশী রূপকথা

আতনিন বিন জহির

বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা