তারেক অণু
কাঠ ঠোকরার মজার কথা
আজ সকালে হাঁটতে যেয়ে এক জোড়া সোনালী পিঠের কাঠঠোকরা দেখে নেটে দেখা এদের সেই জিহ্বার কথা মনে পড়ল, অবিশ্বাস্য লম্বা জিহ্বা, সেটি খুলির সাথে কিভাবে যে পেচিয়ে থাকে সেটা ছবি না দেখলে বিশ্বাস করবেন না। এদের জিহ্বা শুরু হয় কপাল থেকে, একেবারে পেঁচিয়ে তারপরে চঞ্চু দিয়ে বের হয়।
আমরা যেটা দেখলাম বা সাধারণত আপনি যেটা দেখেন সেটার নাম কিন্তু বাংলার নামে বাংলা-কাঠঠোকরা, (Black-rumped Flameback, /Dinopium benghalense)।
কয়েক হাজার বছরের পুরোনো ধাঁধা হচ্ছে কাঠঠোকরার ঠকঠকে মানুষের মাথা ধরে যায় তাহলে কাঠঠোকরার কী হয়? এখন আমরা জানি তাদের কিছুই হয়না এই শব্দ তাদের মগজ পর্যন্ত সেই ভাবে আঘাত হানে না। কিন্তু এই সমস্ত গবেষণা করতে যেয়ে মানুষ পেয়েছে বিস্ময়কর একেবারেই অবিশ্বাস্য সব তথ্য-
একটি কাঠঠোকরা সেকেন্ডে ২০ বার ঠোকরাতে পারে, কিন্তু এরচেয়েও অনেক বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে তারা কত গতিতে এই ঠোকরটা দেয়, কোন বস্তুর পতনের সময় তার উপর কাজ করা g ফোর্স তো আপনাদের সকলের খেয়াল আছে যে ৯.৮১ মিটার/সেকেন্ড, একজন মানুষ যেখানে ৬০/১০০ g ফোর্স পর্যন্ত নিতে পারে ফাইটার বিমানের পাইলট বা মহাকাশচারীরা বিশেষ প্রশিক্ষণের পরে সামান্য বেশি নিতে পারেন সেখানে একটি কাঠঠোকরা ১২০০ থেকে ১৪০০ g ফোর্সে অনায়াসে কাঠ ঠোকরাতেই থাকে সারা দিন! ঠান্ডা মাথায় সামান্য একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন কী অবিশ্বাস্য তথ্য এটি।
সারা পৃথিবীতে ৩০০ প্রজাতির বেশি কাঠঠোকরা আছে এবং বাংলাদেশে আছে অন্তত ২১ প্রজাতির, দুঃখজনকভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কাঠঠোকরা ivory-billed Woodpecker ( the God Bird) এবং Imperial Woodpecker বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে যে কাঠঠোকরা টিকে সবচেয়ে বড় ধরা হয় সেটিও বাংলাদেশের পাহাড়ি বনে আছে বড়-মেটেকুড়ালি (Great Slaty Woodpecker)।
এই ইট-কাঠ-কংক্রিটের অরণ্যে এখনো টিকে আছে কাঠঠোকরার ঠক ঠক, গাছের জন্য ক্ষতিকর পোকা খেয়ে তারা অসম্ভব গুরুত্ব রাখে নিসর্গে গাছ টিকিয়ে রাখতে।
Comments
Post a Comment