আতিফা নাহার পায়রার গল্প : প্রকৃতির প্রতিশোধ
প্রকৃতির প্রতিশোধ
-বলো মামণি
-কখন বাসায় আসবে?
-এই তো, দশটার মধ্যেই ফিরব মা।
-তাড়াতাড়ি আসো মা।
-ওকে, চেষ্টা করব। জরুরি একটা কাজ থাকাতে একটু দেরি হবে। ফ্রিজে নুডলস করা আছে গরম করে সন্ধ্যায় খেয়ে নিয়ো।
-আচ্ছা মা। আল্লাহ হাফেজ।
আমি দুটোয় বাসায় এসেছি। এসেই মাকে ফোন দিয়েছি। এটাই আমাদের নিয়ম। স্কুল থেকে ফিরেই মাকে জানাতে হয়, তাতে মায়েরও ভালো লাগে। শত ব্যস্ততার মাঝেও আমার ফোন পেলে মা খুশি হয়।
বাবা চলে যাওয়ার এক বছর হয়ে গেল। বাবা চলে যাওয়ার ব্যাপারটা খুব কষ্টের। বাবা আমাদের সামনেই চলে গেছে। তাকে খুন করা হয়েছে। আমাদের বিল্ডিংয়ে একজন প্রচন্ড ক্ষমতাবান লোক ভাড়া থাকতেন। তার বাসায় প্রায় সময় অনেক মানুষের আসা যাওয়া ছিল। আমার ওই লোকগুলোকে দেখলে ভীষণ ভয় করত। তিনি চাইতেন আমাদের তিনতলা বাড়িটা ভেঙে দশ/বিশ তলা বিল্ডিং করতে। কিন্তু বাবা কিছুতেই রাজি হতেন না। বাবা রাজি হতেন না আমার কথা ভেবে কারণ আমার স্কুলটা বাড়ির কাছেই আর বাবাও বাড়িটাকে খুব ভালোবাসতেন। এই বাড়ি আমার দাদাজান তৈরি করেছিলেন। আমরা এই এলাকার পুরনো বাসিন্দা।
ক্ষমতাবান লোকটি যে কোনো উপায়ে আমাদের বাড়িটি দখল করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু বাবা কিছুতেই অনুমতি দিচ্ছিলেন না। একদিন বাড়ির ছাদে, আলোচনার নামে বাবার সাথে ওই লোকের তুমুল ঝগড়া লেগে গেল। একসময় লোকটি বাবাকে একটা ধাক্কা দিল। বাবা গিয়ে পড়ল অগোছালো কারেন্টের তারের উপর। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবা জ্ঞান হারালেন। মায়ের চিৎকারে আরো অনেক মানুষজন জমে গেল। পরে আমরা বুঝলাম বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
আমার আর মায়ের চোখের সামনেই বাবা চলে গেলেন। পরে অবশ্য লোকটিকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিল কিন্তু সপ্তাহখানেক না যেতেই তাকে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
পরে নিজেদের বাসাটাও আমাদেরকে ছাড়তে হয়েছে। কম ভাড়ায় কাছের একটি বিল্ডিংয়ের ছাদে একরুমের একটি বাসায় আমাদের নতুন ঠিকানা হলো।
আমার বাবার কথা খুব মনে পড়ে। যখন দেখি ওই লোকটি বিরাট গাড়িতে করে আমাদের সামনে দিয়ে চলে যায়, তখন বেশি করে বাবার কথা মনে হয়। বাবা বলেছিল, আমরা একটা গাড়ি কিনব। তারপর আমরা তিনজনে ঘুরে বেড়াব। কিন্তু সেটা আর আমাদের হয়নি। বাবাই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।
দুপুরে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। বাসায় একা একা ভালো লাগে না। সারাক্ষণ কার্টুন দেখতে দেখতে কার্টুন দেখতেও এখন বিরক্ত লাগে। ঘুম থেকে উঠে দেখি ছয়টা বেজে গেছে। অবাক হয়ে ভাবলাম এতক্ষণ ঘুমিয়েছি!
মায়ের আসতে এখনও অনেক দেরি। ছাদে গেলাম, বাইরেটা অন্ধকার হয়ে আসছে। ফিরে এলাম ঘরে। ফ্রিজ থেকে নুডলস বের করে গরম করে খেয়ে নিলাম। স্কুল ব্যাগ খুলে ডায়েরি বের করে আগামীকালের হোম ওয়ার্ক দেখে পড়তে বসলাম। বিজ্ঞানের পড়া শেষ করে বাংলা বইটা টেনে নিতেই কারেন্ট চলে গেল। হাতড়ে হাতড়ে ঘরের বাইরে খোলা ছাদে চলে এলাম। চারপাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আকাশে চাঁদও নেই। তবে অসংখ্য তারা আছে। আমার একটু একটু ভয় ভয় করতে লাগল। কিছুক্ষণ পরেই কারেন্ট চলে এলে আমি পড়ার টেবিলে আসলাম।
এমন সময় আমাদের আগের বাড়ি থেকে চিৎকার শোনা যেতে লাগল। আমি বুঝতে পারলাম এটা ওই ক্ষমতাবান লোকটির বউয়ের কণ্ঠ। অনেক মানুষ ছোটাছুটি করে ওই বাসায় যাচ্ছে। একটু পরে একটি এ্যাম্বুলেন্স আসল। বাড়িটা ভরে গেল মানুষে মানুষে।
আমার খুব ভয় করতে লাগল। মায়ের জন্য অপেক্ষা করছি।
হঠাৎ দেখি ওই বাসা থেকে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসছে একজন। যে আমার খুব প্রিয়, খুব আপন। সেই কি তবে এই কাজটি করেছে? আমি ঠিক জানি না।
এমন সময় মা ফিরে আসল। মা হয়ত নিচেই কিছু শুনেছে। মা টিভি অন করলে সেখানে দেখাচ্ছে যে ওই ক্ষমতাবান লোকটি নিজ বাসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।
আমি দুটোয় বাসায় এসেছি। এসেই মাকে ফোন দিয়েছি। এটাই আমাদের নিয়ম। স্কুল থেকে ফিরেই মাকে জানাতে হয়, তাতে মায়েরও ভালো লাগে। শত ব্যস্ততার মাঝেও আমার ফোন পেলে মা খুশি হয়।
বাবা চলে যাওয়ার এক বছর হয়ে গেল। বাবা চলে যাওয়ার ব্যাপারটা খুব কষ্টের। বাবা আমাদের সামনেই চলে গেছে। তাকে খুন করা হয়েছে। আমাদের বিল্ডিংয়ে একজন প্রচন্ড ক্ষমতাবান লোক ভাড়া থাকতেন। তার বাসায় প্রায় সময় অনেক মানুষের আসা যাওয়া ছিল। আমার ওই লোকগুলোকে দেখলে ভীষণ ভয় করত। তিনি চাইতেন আমাদের তিনতলা বাড়িটা ভেঙে দশ/বিশ তলা বিল্ডিং করতে। কিন্তু বাবা কিছুতেই রাজি হতেন না। বাবা রাজি হতেন না আমার কথা ভেবে কারণ আমার স্কুলটা বাড়ির কাছেই আর বাবাও বাড়িটাকে খুব ভালোবাসতেন। এই বাড়ি আমার দাদাজান তৈরি করেছিলেন। আমরা এই এলাকার পুরনো বাসিন্দা।
ক্ষমতাবান লোকটি যে কোনো উপায়ে আমাদের বাড়িটি দখল করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু বাবা কিছুতেই অনুমতি দিচ্ছিলেন না। একদিন বাড়ির ছাদে, আলোচনার নামে বাবার সাথে ওই লোকের তুমুল ঝগড়া লেগে গেল। একসময় লোকটি বাবাকে একটা ধাক্কা দিল। বাবা গিয়ে পড়ল অগোছালো কারেন্টের তারের উপর। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবা জ্ঞান হারালেন। মায়ের চিৎকারে আরো অনেক মানুষজন জমে গেল। পরে আমরা বুঝলাম বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
আমার আর মায়ের চোখের সামনেই বাবা চলে গেলেন। পরে অবশ্য লোকটিকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিল কিন্তু সপ্তাহখানেক না যেতেই তাকে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
পরে নিজেদের বাসাটাও আমাদেরকে ছাড়তে হয়েছে। কম ভাড়ায় কাছের একটি বিল্ডিংয়ের ছাদে একরুমের একটি বাসায় আমাদের নতুন ঠিকানা হলো।
আমার বাবার কথা খুব মনে পড়ে। যখন দেখি ওই লোকটি বিরাট গাড়িতে করে আমাদের সামনে দিয়ে চলে যায়, তখন বেশি করে বাবার কথা মনে হয়। বাবা বলেছিল, আমরা একটা গাড়ি কিনব। তারপর আমরা তিনজনে ঘুরে বেড়াব। কিন্তু সেটা আর আমাদের হয়নি। বাবাই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।
দুপুরে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। বাসায় একা একা ভালো লাগে না। সারাক্ষণ কার্টুন দেখতে দেখতে কার্টুন দেখতেও এখন বিরক্ত লাগে। ঘুম থেকে উঠে দেখি ছয়টা বেজে গেছে। অবাক হয়ে ভাবলাম এতক্ষণ ঘুমিয়েছি!
মায়ের আসতে এখনও অনেক দেরি। ছাদে গেলাম, বাইরেটা অন্ধকার হয়ে আসছে। ফিরে এলাম ঘরে। ফ্রিজ থেকে নুডলস বের করে গরম করে খেয়ে নিলাম। স্কুল ব্যাগ খুলে ডায়েরি বের করে আগামীকালের হোম ওয়ার্ক দেখে পড়তে বসলাম। বিজ্ঞানের পড়া শেষ করে বাংলা বইটা টেনে নিতেই কারেন্ট চলে গেল। হাতড়ে হাতড়ে ঘরের বাইরে খোলা ছাদে চলে এলাম। চারপাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আকাশে চাঁদও নেই। তবে অসংখ্য তারা আছে। আমার একটু একটু ভয় ভয় করতে লাগল। কিছুক্ষণ পরেই কারেন্ট চলে এলে আমি পড়ার টেবিলে আসলাম।
এমন সময় আমাদের আগের বাড়ি থেকে চিৎকার শোনা যেতে লাগল। আমি বুঝতে পারলাম এটা ওই ক্ষমতাবান লোকটির বউয়ের কণ্ঠ। অনেক মানুষ ছোটাছুটি করে ওই বাসায় যাচ্ছে। একটু পরে একটি এ্যাম্বুলেন্স আসল। বাড়িটা ভরে গেল মানুষে মানুষে।
আমার খুব ভয় করতে লাগল। মায়ের জন্য অপেক্ষা করছি।
হঠাৎ দেখি ওই বাসা থেকে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসছে একজন। যে আমার খুব প্রিয়, খুব আপন। সেই কি তবে এই কাজটি করেছে? আমি ঠিক জানি না।
এমন সময় মা ফিরে আসল। মা হয়ত নিচেই কিছু শুনেছে। মা টিভি অন করলে সেখানে দেখাচ্ছে যে ওই ক্ষমতাবান লোকটি নিজ বাসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।
আজ ছিল আমার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী।
[আতিফা নাহার পায়রা, অষ্টম শ্রেণি, হজরত আয়েশা (রাঃ) একাডেমি, আদাবর, ঢাকা]
[আতিফা নাহার পায়রা, অষ্টম শ্রেণি, হজরত আয়েশা (রাঃ) একাডেমি, আদাবর, ঢাকা]
Comments
Post a Comment