সোফি পারোভি রেইনের গল্প


বন্দী সাতদিন

পর্ব-২




জিমি সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলো। চারদিক ঝাপসা দেখাচ্ছে। দুই মিনিট পর তার চোখের দৃষ্টি পরিষ্কার হল। সে দেখল মিকাসা ইউনাকে ঘুম থেকে উঠানোর চেষ্টা করছে। মিকাসা যখন দেখল জিমি উঠে গেছে মিকাসা দৌড়ে জিমির কাছে গেল।

মিকাসাঃ জিমি! তাড়াতাড়ি উঠে পরো। চারজন অপহরণকারী আমাদের অপহরণ করেছে।

জিমি একথা শুনে ভয়ে কথা বলা ভুলে গেল। মিকাসা জিমিকে শান্ত করে বলল, “ জিমি, এখন ভয় পেলে চলবে না! চলো আগে ইউনাকে উঠাই। আমি সব বুঝিয়ে বলছি তারপর। আমাকে এখন সাহায্য করো"।


জিমি মাথা নাড়ল। জিমি ও মিকাসা ইউনাকে তুলল। ইউনা একটু নরমসরম তাই ক্লোরোফর্মের প্রভাব তার উপর থেকে এখনো যায়নি। অনেকক্ষণ পর ইউনার জ্ঞান ফিরলো। সে চারদিক তাকিয়ে ছটফট করতে লাগলো। মিকাসা তাকে শান্ত করার পর বলতে শুরু করলো,

“ মিকাসাঃ আমার সবার আগে জ্ঞান ফেরে। জ্ঞান ফেরার পর আমি জিমিকে দেখি, এরপর দেখি একজন লোক ইউনাকে ঘরের এক কোণে ফেলে দিলো। আমাকে উঠতে দেখে চারজনের একজন বলে উঠে...’এইতো মেয়েটা উঠে গেছে।‘

সেখানে তিনজন লোক ও একজন মহিলা ছিল। তাদের কথা বার্তা অনুযায়ী মহিলাটা দলের প্রধান। সবাই তাকে মিস রিক্কা ডাকছিল।

‘মিস রিক্কাঃ জো মেয়েটাকে এদিকে নিয়ে এসো।‘

জো নামের লোকটা আমাকে মহিলাটার কাছে নিয়ে গেল।

‘মিস রিক্কাঃ তোমার নাম কী?

আমিঃ মিকাসা।

মিস রিক্কাঃ তোমরা ওই গুহাটা কীভাবে খুঁজে পেলে?

আমিঃ আমরা কিছুদিন আগে ঘুরতে এসে ওটা খুঁজে পেয়েছি।

মিস রিক্কাঃ বব, ওদের তিনজনকে আপাতত এখানে বন্দী করে রাখো। জো, ডক্টর ল্যারিকে কল করে আসতে বলো। ওদের মেমোরি ইরেজ করতে হবে।

জোঃ হ্যালো( ফোনে)! হ্যাঁ, মিস্টার ল্যারি। মেমোরি ইরেজ। তিনটা বাচ্চা জানতে পেরেছে। হ্যাঁ, কালকেই। গুডবাই, ডক্টর।

ববঃ মিস রিক্কা, বাচ্চা গুলোকে কি বন্দী রুমে নিয়ে যাবো?

মিস রিক্কাঃ না। ওইখানে না। রুম ৩০২ নিয়ে যাও।

ববঃ ৩০২!

মিস রিক্কাঃ হ্যাঁ।“



মিকাসা কথা বন্ধ করলো। রুম নিঃশব্দ হয়ে গেলও।

ইউনাঃ আমি গুহার পথে যাওয়ার সময় দুইজন লোক আমাকে ধরে নিয়ে আসে। আমি এই বাড়িতে ঢুকার পর সুযোগ পেয়ে দৌড় দিলাম। তাই বাসার অনেকটাই আমি বুঝে নিয়েছিলাম। তখন ওই দুইজন লোক আমাকে অজ্ঞান করে নিয়ে আসে এবং কিছুক্ষণ আগে আমার জ্ঞান ফিরে।

কিছুক্ষণ পর দরজা খুলল বব-২। বব-২ এর পিছন পিছন আসলো বব আর জো। বব-২ বোবা। কথা বলতে পারে না। কেউ তার নাম জানে না তাই বব এর নাম অনুযায়ী তার নাম বব-২ রাখে তারা। তারা সবাই রুমে ঢুকে তাদের দিকে রাগ রাগ চোখে তাকায় এবং কিছু না বলে তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পর মিস রিক্কা এবং ডাক্তারদের এপ্রন পরা একজন বুড়ো লোক এলেন। দেখেই বোঝা গেলো তিনি ডক্টর ল্যারি। তারা ঢুকতেই বব, বব-২ এবং জো সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। ডক্টর ল্যারি রুমে ঢুকে আগে তাদের দিকে তাকায়, তারপর বলে,

‘ বাচ্চা গুলোকে কালকে তৈরি করে রাখবে।‘

বব-২ঃ ইয়েস, ডক্টর।

মিস রিক্কাঃ কয়দিন লাগবে?

ডক্টর ল্যারিঃ সাতদিন লাগবে পুরোপুরি মেমোরি ইরেজ হতে। প্রত্যেকদিন একটু একটু করে মেমোরি ঝাপসা হতে থাকবে। প্রতিদিন একবার করে ইনজেকশন দিলেই হবে। আট দিনের মাথায় সব পুরোপুরি ভুলে যাবে।

এটা বলে মিস রিক্কা আর ডক্টর ল্যারি কথা বলতে বলতে চলে গেলো। জো, বব পেছন পেছন চলে গেল। বব-২ ও চলে গেলো দরজা বন্ধ করে।

তাদের কথাবার্তা শুনে ইউনা, মিকাসা আর জিমি একদম চুপ হয়ে গেলো।

জিমিঃ আমাদের সাতদিনের মধ্যে এখান থেকে পালাতে হবে!

ইউনাঃ না হলে আমাদের মেমোরি মুছে ফেলবে ওরা

মিকাসাঃ তাহলে, সময় মাত্র এক সপ্তাহ...



[চলবে...]

 

Comments

  1. খুবই উত্তেজনার মুহূর্ত! এরপর কি হবে? পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি।

    ReplyDelete
  2. দারুন!😯




    ReplyDelete
  3. চমৎকার লিখেছো রেইন...

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

ভিনদেশী রূপকথা

আতনিন বিন জহির

বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা