একক অভিনয়
সোনার বাংলা চাই
মঈন উদ্দিন কোহেল
একটা করুন সুরের মূর্ছনায় সকলে আচ্ছন্ন। এই জনপদ, যা গতকালেও ছিলো আনন্দমূখর, আজ তার বাঁশিতে আসে ফাঁটল ধরার খবর। এখনো সকল কৃষকের গোলা ভর্তি সোনালী ধানে, তবুও তাদের খুশি যেন বড় বেসুরো বাজে কানে। বর্তমানের স্বাচ্ছন্দ যখন ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার দোলায় দোল খায়, বর্তমানের সুরটি তখন আপনিতেই বড় বেসুরো হয়ে যায়। বড় একটা ঝড় বইয়া যায় এই জনপদে, তখন তারা ভাবনায় পইড়া যায়। ঝড়ে সবাই কাইত হইয়া পড়ে, ভাবে তারা কি আছে উপায় ? অসূর শক্তি যখন তান্ডব করে, মাথায় তখন রক্ত চইড়া যায়। এই যে এত বড় একটা ঘটনা ঘটে, সাধ্য কি কেউ তাদের মাথা নোয়ায় !
উনিশ-শ-একাত্তুর সালের সাতই মার্চ। জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে দৃপ্ত কন্ঠে ঘোষনা দিলেন- “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।” বাংলার মুক্তিকামী জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়লো অসম যুদ্ধে। শুরু হলো নিরস্ত্র বাংগালীদের উপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির নির্মম নির্যাতন। ঘরে ঘরে আগুন, হত্যা, লুন্ঠন, অত্যাচার, সে কি ভুলা যায় ! পুত্রহারা মায়ের, ভাইহারা বোনের, পিতাহারা সন্তানের আকুল হাহাকার, যায় কি ভুলা ?!
না ! সেদিন বাংগালীরা মাথা নত করেনি। ছিনিয়ে এনেছিলো কঠিন বাঁধনে আবদ্ধ থাকা স্বাধীনতার লাল সূর্যটাকে। আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলো একটি লাল-সবুজের পতাকা।
আজ দু’হাজার বিশ সাল। আমরা কি পেরেছি, তাঁদের যথাযথ সম্মান জানাতে ? এই স্বাধীন দেশে, মুক্ত বাতাসে, বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে কি পারছি আমরা ? আমরা ছোটরা-শিশুরা কি ভয়হীন ? এই কি স্বাধীনতা ? এই কি স্বাধীন দেশ ?
আমি সোনার বাংলা চাই ! বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলা চাই ! আকাশে-বাতাসে প্রজাপতির মতো উড়তে উড়তে, দোয়েল পাখির মিষ্টি সুরে গান গাইতে গাইতে আমি বড় হতে চাই ! আমি মানুষ হতে চাই ! দিবে না আমাকে সেই দেশ, দিবে না বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলাদেশ ? কি, দিবে না ?!
Comments
Post a Comment